বাজেটে সাধারণ মানুষের স্বার্থ কতটা রক্ষা হলো?

সমকাল সাইফুর রহমান তপন প্রকাশিত: ০৯ জুন ২০২৪, ০৯:৩০

জাতীয় সংসদে বৃহস্পতিবার ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব পেশ হলো। অর্থমন্ত্রীর বাজেট ঘোষণা শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই শুরু হয়েছে এর বিশ্লেষণ। অর্থনীতিবিদ ছাড়াও বিভিন্ন খাতের অংশীজন এ নিয়ে কথা বলছেন সংবাদমাধ্যমে। শুধু চুলচেরা নয়, রীতিমতো জমজমাট নানা আলোচনা চলছে। অবশ্য এমন আলোচনা প্রত্যাশিতই ছিল, বিশেষ করে যখন জাতীয় অর্থনীতি বর্তমানে গত দেড় দশকের মধ্যে সবচেয়ে কঠিন সময় পার করছে। একই সঙ্গে জনজীবনও নানা অর্থনৈতিক চাপে পিষ্ট হচ্ছে। 


প্রাক-বাজেট আলোচনাগুলো খেয়াল করলে দেশের অর্থনীতির রোগগুলো বেশ স্পষ্ট বোঝা যায়– মূলত অপর্যাপ্ত রাজস্ব আহরণ, তীব্র ডলার সংকট ও উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে সামষ্টিক অর্থনীতির ব্যবস্থাপনায় বেসামাল অবস্থা। অন্যদিকে দুই বছরের বেশি সময় ধরে সব নিত্যপণ্য ও সেবার অস্বাভাবিক দাম বাড়ার বিপরীতে সিংহভাগ মানুষের প্রকৃত আয় কমে যাওয়ায় তারা ভীষণ কষ্টে আছে। ফলে প্রস্তাবিত বাজেটবিষয়ক আলোচনাও আবর্তিত হচ্ছে দুটি বিষয় ঘিরে– ১. বাজেট প্রস্তাবে অর্থনীতির কঠিন অসুখ সারাতে কার্যকর পদক্ষেপ কী আছে; ২. এতে জনজীবনে– বিশেষত মধ্যবিত্ত ও নিম্নআয়ের মানুষের মধ্যে, স্বস্তি ফেরার আশু সম্ভাবনা কতটুকু। 


দুটি বিষয় পরস্পর বিচ্ছিন্ন না হলেও, অর্থাৎ অর্থনীতির অসুখ সারাতে গৃহীত কার্যকর পদক্ষেপ জনজীবনে স্বস্তি ফেরাতে সক্ষম হলেও, এটা মানতে হবে, প্রথমটির ক্ষেত্রে যেখানে স্বল্পমেয়াদির পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদি পদক্ষেপ প্রয়োজন, সেখানে দ্বিতীয়টির প্রয়োজন জরুরি পদক্ষেপ। যেমন বিশ্লেষকদের প্রায় সবাই মনে করেন, অর্থনীতির রোগ সারাতে স্বল্পমেয়াদে ব্যাংক সুদ ও মুদ্রাবিনিময় হার বাজারভিত্তিক করার পাশাপাশি করের আওতা বাড়ানোর পদক্ষেপ নিতে হবে, আর তা টেকসই করতে দীর্ঘমেয়াদে ব্যাংক ও রাজস্ব আহরণ ব্যবস্থায় আমূল সংস্কার অপরিহার্য। আর জনজীবনে দ্রুত স্বস্তি ফেরাতে  ব্যাংক সুদ ও মুদ্রাবিনিময় হার বাজারভিত্তিক করার পাশাপাশি বাজারে নিত্যপণ্যের যথেষ্ট সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। একই সঙ্গে ব্যক্তি পর্যায়ে আয়করের ঊর্ধ্বসীমা বাড়ানোসহ আরও কিছু পদক্ষেপ নিলে সিংহভাগ মানুষ একটু শান্তি পাবে।


কিন্তু প্রস্তাবিত বাজেটে বেশির ভাগ বিশেষজ্ঞ দীর্ঘমেয়াদি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের ভীষণ ঘাটতি দেখছেন; এমনকি অর্থমন্ত্রীর স্বল্পমেয়াদি পদক্ষেপগুলোকেও তারা যথেষ্ট মনে করছেন না। যেমন, দেশের সর্বাধিক পরিচিত বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সিপিডির বাজেট প্রতিক্রিয়াকে সমকাল শনিবার তুলে ধরেছে ‘অস্বাভাবিক সময়ে সাধারণ বাজেট’ শিরোনামে। অর্থাৎ সময়ের দাবি পূরণে ব্যর্থ হয়েছে এবারের বাজেট প্রস্তাবগুলো। এবারের বাজেট কি আসলেই এতটা হতাশাজনক? সেখানে সাধারণ মানুষের স্বার্থ কি একেবারেই উপেক্ষিত?


প্রথমে স্বীকার করা দরকার, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য বলছে, মে মাসে দেশে মজুরি বৃদ্ধির হার ৭.৮৮ শতাংশ; মূল্যস্ফীতির হার ৯.৮৯ শতাংশ। অর্থাৎ আয়ের চেয়ে ব্যয় ২ শতাংশ বেশি। এটাও আমরা জানি, মূলত উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও ডলারের বেসামাল দরের কারণেই এ অবস্থার জন্ম হয়েছে। তবে এটাও সত্য যে, বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মেনেই ব্যাংক সুদের হার ইতোমধ্যে বাজারের হাতে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এতে ঋণের খরচ বাড়লেও আমানতকারীদের আয় বাড়ছে এবং মুদ্রার সঞ্চলন কমে আসছে; যা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য জরুরি। একই সঙ্গে মুদ্রাবিনিময় হার প্রায় বাজারভিত্তিক হওয়ায় মে মাসেই রেমিট্যান্স বেড়ে সোয়া দুই বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে, যা গত তিন বছরেরও বেশি সময়ের মধ্যে সর্বোচ্চ। ধারণা করা হয়, এর ফলে রপ্তানি আয়ের প্রত্যাবাসনও বাড়বে। এসবের ইতিবাচক প্রভাব শুধু আমদানিতেই পড়বে না, বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভও বাড়াবে, যা ক্রমান্বয়ে মূল্যস্ফীতিতেও লাগাম পরাবে।


বাজেটে পেঁয়াজ, রসুন, মটর, ছোলা, চাল, গম, আলু, মসুর, ভোজ্যতেল, চিনি, আদা, হলুদ, শুকনামরিচ, ডাল, ভুট্টা, ময়দা, আটা, লবণ, গোলমরিচ, এলাচ, দারচিনি, লবঙ্গ, খেজুর, তেজপাতা, পাট, তুলা, সুতা এবং সব ধরনের ফলসহ ৩০ পণ্যের সরবরাহের ক্ষেত্রে উৎসে কর বর্তমান ২ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১ শতাংশ করার প্রস্তাব এসেছে। ঠিকঠাক কার্যকর হলে এ সিদ্ধান্তও মূল্যস্ফীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। তবে এটা ঠিক, এসব পণ্যের সরবরাহ ব্যবস্থার কোনো পর্যায়ে কোনো বিশেষ গোষ্ঠীর একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ কাজ করলে প্রত্যাশিত ফল মিলবে না। এ জন্য সরকারকে নজরদারির পাশাপাশি সরবরাহের বিশেষ ব্যবস্থা চালু করতে হবে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
ঘটনা প্রবাহ

ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us