পাসের হার ও জিপিএ দিয়ে কি শিক্ষার মানের প্রকৃত চিত্র বোঝা যায়

প্রথম আলো তারিক মনজুর প্রকাশিত: ১৫ মে ২০২৪, ২২:২৩

২০২৪ সালের এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। এ বছর ১১টি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে মোট পরীক্ষার্থী ছিল ২০ লাখ ২৪ হাজার ১৯২ জন। এর মধ্যে পরীক্ষায় অংশ নেয় ২০ লাখ ১৩ হাজার ৫৯৭ জন। তাদের মধ্যে পাস করেছে ১৬ লাখ ৭২ হাজার ১৫৩ পরীক্ষার্থী। অর্থাৎ পাসের হার ৮৩ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ লাখ ৮২ হাজার ১২৯ জন। আগের বছরের চেয়ে পাসের হার বেড়েছে ২ দশমিক ৬৫ শতাংশ এবং জিপিএ-৫ কমেছে ১ হাজার ৪৪৯। এসব পরিসংখ্যান শিক্ষার কোনো মান নির্দেশ করে কি না, সেটাই প্রশ্ন।


আমাদের দেশে শিক্ষার মানের কতটুকু উন্নতি ঘটল, এটা বোঝাতে সাধারণভাবে পাসের হারকে বিবেচনা করা হয়। কিন্তু পাসের হার যে শিক্ষার প্রকৃত চিত্র তুলে ধরে না তার প্রমাণ এইচএসসির পর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের ব্যর্থতা। প্রতিবছর এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ পরীক্ষার্থী পাস করে। অথচ এসব পাস করা শিক্ষার্থীর শতকরা ১০ থেকে ১২ ভাগও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় পাস নম্বর তুলতে পারে না।


এখন শিক্ষা মানে জিপিএ-নির্দেশক একটি সার্টিফিকেট। সেটি কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য কতটা সুবিধা দেবে কিংবা চাকরির বাজারে কতটা এগিয়ে রাখবে, এটা নিয়েই ভাবনা সবার। জিপিএ-৫ নিশ্চিত করার জন্য অভিভাবকেরা সবকিছু করতে প্রস্তুত থাকেন। কিন্তু এই জিপিএ ও নম্বর শিক্ষার্থীর দক্ষতা বা পারদর্শিতা যথাযথভাবে নির্দেশ করে না। আর কৃতকার্য–অকৃতকার্যের হার দেখে কিংবা আগের বছরগুলোর সঙ্গে তুলনা করে শিক্ষার অগ্রগতি-উন্নতি নির্ধারণ করাও সম্ভব নয়।


ভালো শিক্ষাব্যবস্থা শিক্ষার্থীকে ভবিষ্যতের জন্য তৈরি করে দেয় এবং জীবনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সক্ষম করে তোলে। এ ক্ষেত্রে শিক্ষার কোন পর্যায়ে শিক্ষার্থী কতটুকু দক্ষতা অর্জন করবে, তা পরিষ্কারভাবে নির্দেশ করা থাকে। ভালো শিক্ষাব্যবস্থা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নিজের রূপ বা ধরন বদলে নিতে পারে। পুরো প্রক্রিয়াটি হয় শিক্ষার্থীকেন্দ্রিক এবং তাদের জন্য স্বস্তিদায়ক। শিক্ষা গ্রহণের জন্য নানা রকম উপাদান ও উপকরণ ব্যবহারের সুযোগ থাকে। বারবার অনুশীলন ও পরীক্ষণের মাধ্যমে নতুন নতুন ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীর জ্ঞান ও দক্ষতা প্রয়োগের সক্ষমতা নিশ্চিত করা হয়। শিক্ষার্থীকে যাচাই ও মূল্যায়ন করার জন্য বৈচিত্র্যময় উপায় থাকে। অর্জিত শিক্ষা শিক্ষার্থীর মানসিকতায় ইতিবাচক পরিবর্তন আনে। তা ছাড়া ভালো শিক্ষাব্যবস্থায় সমাজের বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে শিক্ষার্থীর সংযোগ তৈরি হয়।


কোনো ধরনের শিক্ষায়ই নম্বর বা জিপিএ–প্রধান হতে পারে না; বরং শিক্ষার্থীর দক্ষতা অর্জনের দিকটি প্রধান। দক্ষতা অর্জনকে গুরুত্ব দিয়েই শিক্ষাকাঠামো পরিচালিত হওয়া উচিত। বাংলাদেশের বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থায় প্রতিটি শ্রেণির একেকটি বিষয়ের জন্য যোগ্যতা বা দক্ষতা নির্দিষ্ট করা আছে। এসব দক্ষতা অর্জন করা সাপেক্ষে শিক্ষার্থীকে পরবর্তী শ্রেণিতে উত্তীর্ণ করানোর কথা। কিন্তু আমাদের দেশের মূল্যায়ন বা পরীক্ষাপদ্ধতি নম্বর ও জিপিএ-ভিত্তিক হওয়ায় শিক্ষার্থীর দুর্বলতার ক্ষেত্রগুলো শনাক্ত করা যায় না। আর শনাক্ত করা যায় না বলে বিভিন্ন পারদর্শিতায় দুর্বল থেকেই তারা পরের শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হয়। এ সমস্যা কাটানোর ভালো উপায় হতে পারে পরীক্ষাপদ্ধতির আমূল পরিবর্তন করা এবং মূল্যায়নের ধরনে বদল আনা।


বর্তমান পদ্ধতিতে নম্বরপত্রে দেখানো হয়, একজন শিক্ষার্থী বাংলায় ৭৮ নম্বর এবং এ গ্রেড পেয়েছে। শিক্ষার্থীর এই নম্বর ও গ্রেড তার বাংলা বিষয়ের সক্ষমতার দিক বা ক্ষেত্র চিহ্নিত করে না। অথচ মূল্যায়নপত্রে বাংলা বিষয়ের ঘরে দেখানো দরকার ছিল, শিক্ষার্থী ভাষা-যোগাযোগে কতটুকু পারঙ্গম, বিবরণমূলক ও বিশ্লেষণমূলক লেখা কেমন লিখতে পারে, ভাষার ব্যাকরণ কতটুকু প্রয়োগ করতে পারে, তার সাহিত্যের বোধ ও সাহিত্য-পর্যালোচনার সক্ষমতা কেমন।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us