দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো শিক্ষা ও গবেষণা ছাড়া অন্য সব বিষয়ে একের পর এক খবরের শিরোনাম হচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকের চৌর্যবৃত্তি ও যৌন হয়রানির খবর শেষ হতে না হতেই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ডেকে নিয়ে ধর্ষণের মতো ঘটনা ঘটেছে।
এরপর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীর আত্মহত্যাকে কেন্দ্র করে বের হয়ে আসে নিপীড়নের অনেক রকম ইতিহাস। এর মধ্যে এক মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিকে বরণ করে নেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে সেখানকার কর্মচারীদের অদ্ভুত ভঙ্গিতে নৃত্য করার ভিডিও–ও ভাইরাল হয়েছে। এসব ঘটনার সঙ্গে কোনো না কোনোভাবে রাজনীতি কিংবা রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার খবরও পত্রপত্রিকার প্রতিবেদনগুলো থেকে জানা যায়।
এসব ঘটনা যখন চলমান, ঠিক তখনই বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) আবার খবরের শিরোনাম হয়েছে। কেন হয়েছে? শিক্ষা কিংবা গবেষণার কারণে? মোটেই নয়! সেখানে ছাত্ররাজনীতি যেন কোনোভাবেই আবার চালু হতে না পারে, এ জন্য সাধারণ ছাত্রদের ব্যানারে আন্দোলন চলে।
তাঁদের দাবি, সরকার দলীয় ছাত্রসংগঠন সেখানে আবার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালু করার চেষ্টা করছে। এখানে জানিয়ে রাখা ভালো, শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যার পর ২০১৯ সালে এক ‘জরুরি বিজ্ঞপ্তি’ জারির মাধ্যমে বুয়েটে রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল।
কিন্তু সোমবার হাইকোর্ট একটি রুল অধ্যাদেশ জারি করেছেন। এতে বলা হয়েছে, বুয়েটে ছাত্ররাজনীতির ক্ষেত্রে আর কোনো বাধা নেই। হাইকোর্টের এই রুলের পর বুয়েটের ভিসি বলেছেন, ‘আদালতের আদেশ শিরোধার্য।’ এদিকে সাধারণ ছাত্ররা আন্দোলন করে চলেছেন। কারণ হিসেবে তাঁরা বলছেন, আতঙ্ক নিয়ে তাঁরা পড়াশোনা করতে চান না।
বুয়েটে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালিত হবে কি হবে না, সেটা এখনো পুরোপুরি পরিষ্কার হওয়া যাচ্ছে না। ধরে নিচ্ছি, আবারও সম্পূর্ণরূপে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড ফিরে আসবে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এর ফলাফল কী হবে?
একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল কাজ তো শিক্ষা ও গবেষণা। রাজনীতি ফিরে আসার পর কি বুয়েটের শিক্ষার মান বেড়ে যাবে? সেখানে কি গবেষণা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পৌঁছে যাবে?