শ্রেণিকক্ষে ছাত্রকে গুলি করে আলোচনায় আসা সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের শিক্ষক রায়হান শরীফ দীর্ঘদিন থেকেই অবৈধ অস্ত্র বহন করেন। মতের অমিল হলেই সেই পিস্তল বের করে হুমকি দেন। বিষয়টি সবাই জানলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
রায়হান শরীফ তাঁর সাবেক কর্মস্থল নর্থ বেঙ্গল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল থেকে চাকরিচ্যুত হয়েছিলেন জ্যেষ্ঠ সহকর্মীকে পিস্তল ঠেকিয়ে হুমকি দেওয়ার অভিযোগে। বর্তমান কর্মস্থলে এসেও কথায় কথায় পিস্তল উঁচিয়ে হুমকি দেওয়া ছাড়েননি বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। মৌখিক অভিযোগ পেয়ে তাঁকে দুই দফা কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছিল কলেজ কর্তৃপক্ষ। কিন্তু তিনি জবাব দেননি বলে জানিয়েছেন অধ্যক্ষ আমিরুল হোসেন চৌধুরী। অধ্যক্ষের দাবি, প্রভাব খাটানোর কারণে রায়হান শরীফের বিরুদ্ধে এত দিন কোনো ব্যবস্থা নেওয়া যায়নি।
গত সোমবার বিকেলে মেডিকেল কলেজে মৌখিক পরীক্ষা চলাকালে আরাফাত আমিন নামের এক শিক্ষার্থীকে গুলি করেন শিক্ষক রায়হান শরীফ। খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে গিয়ে রায়হানের হেফাজত থেকে ২টি বিদেশি পিস্তল, ৮১টি গুলি, ৪টি ম্যাগাজিন ও ১২টি বিদেশি চাকু উদ্ধার করে। পুলিশ জানিয়েছে, রায়হানের বিরুদ্ধে গতকাল মঙ্গলবার সদর থানায় দুটি মামলা হয়েছে। একটির বাদী গুলিবিদ্ধ শিক্ষার্থীর বাবা আবদুল্লাহ আল আমিন। তিনি ছেলেকে গুলি করে হত্যাচেষ্টা ও ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগ এনেছেন। এই মামলায় সিরাজগঞ্জের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বিচারক বিল্লাল হোসেনের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন রায়হান। অপর মামলাটি করেন সিরাজগঞ্জ গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উপপরিদর্শক আবদুল ওয়াদুদ। অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইনের এই মামলায় রায়হানের সাত দিনের রিমান্ড আবেদন জানায় পুলিশ। তবে অন্য মামলায় স্বীকারোক্তি দেওয়ায় রিমান্ড মঞ্জুর হয়নি।