আলোকিত হওয়ার শিক্ষা কোথায়

আজকের পত্রিকা এ এন রাশেদা প্রকাশিত: ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৯:৫১

‘রাষ্ট্র ভাষা বাংলা চাই’—এই দাবি নিয়ে ১৯৫২ সালে যাঁরা শহীদ হলেন, যাঁদের বুকের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে ১৯৬২-র শিক্ষা আন্দোলন, ’৬৬-র ৬ দফা আন্দোলন, ’৬৯-এর গণ-অভ্যুত্থান এবং ’৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ হলো, সেই ’৫২-র দাবি, বাংলা ‘রাষ্ট্র ভাষা’ হলেও কার্যত তা অকার্যকরই রয়ে গেল। যদি বলা যায়, অফিস-আদালতের সর্বত্র কি বাংলা ভাষা চালু হয়েছে? নিম্ন আদালতে হলেও উচ্চ আদালতে তা কার্যকর হলো না কেন? মাঝেমধ্যে কিছু ব্যতিক্রম হতে দেখা যায় মাত্র। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়া প্রাইভেট ও স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়, প্রকৌশল, চিকিৎসা ও কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে কি বাংলা মাধ্যমে লেখাপড়া হয়? যত দিন পর্যন্ত আমরা উচ্চশিক্ষা বাংলায় করতে না পারব, তত দিন আমরা গণমানুষের কাছাকাছি যেতে পারব না। তাদের কান্না বুঝতে পারব না। দেশের গণমানুষের কাছে উন্নয়ন পৌঁছাতে পারব না।


রাশিয়া, চীন, থাইল্যান্ড, কোরিয়া, জাপানসহ বহু দেশ যদি মাতৃভাষায় চিকিৎসাবিজ্ঞানসহ সব উচ্চশিক্ষা মাতৃভাষায় দিতে পারে, বাংলাদেশ পারবে না কেন? ২০১৩ সালে ব্যাংককে এক হাসপাতালে প্রত্যক্ষভাবেই জানার সুযোগ হয়েছিল আমার, সেখানে থাই ভাষায় মেডিকেল ডিগ্রি না থাকলে থাইল্যান্ডের কোথাও চাকরি মেলে না। শুধু নির্ধারিত ডাক্তার ও মেট্রোন বিদেশিদের সঙ্গে আলাপ করেন চিকিৎসা বিষয়ে। এ ছাড়া কেউ একটিও শব্দ উচ্চারণ করে না বা ইংরেজি বলতে পেরে গর্বও অনুভব করে না।


১৯৯৭ সালে ‘বাংলা ভাষা ও আমরা’ নিবন্ধে অধ্যাপক আনিসুজ্জামান একটি সময়ের কথা উল্লেখ করে লিখেছেন, ‘ইংরেজি শিক্ষিত লোকেরা নিজেদের মধ্যে চিঠি চালাচালি করত ইংরেজিতে। জোড়া সাঁকোর ঠাকুরবাড়ির সকলে সে নিয়ম ভাঙলেন। বাংলা ভাষার ব্যাপকতর প্রয়োগের বিষয়ে তাদের উৎসাহের অন্ত ছিল না। শিক্ষাদান যে মাতৃভাষায় করা দরকার, এ কথা সর্বাগ্রে বুঝেছিলেন রবীন্দ্রনাথের মেজ দাদা হেমেন্দ্রনাথ ঠাকুর। তার ওপরেই ভার পড়েছিল রবীন্দ্রনাথ এবং তার সমবয়সীদের শিক্ষিত করে তোলার। তাঁর প্রয়াসের কী ফল দেখা দিয়েছিল তা আমরা জানি। মাতৃভাষায় কেন শিক্ষা দেওয়া দরকার, সে বিষয়ে সবচেয়ে বেশি লিখেছিলেন রবীন্দ্রনাথ এবং কথার চেয়ে দৃষ্টান্ত শ্রেয়—এই নীতির অনুসরণে প্রথমে ব্রহ্মচর্যাশ্রম এবং পরে বিশ্বভারতী স্থাপন করেছিলেন। আজ থেকে ১০৩ বছর আগের কথা। ১৯২১ সাল রবীন্দ্রনাথ যা ভেবেছিলেন, তা তিনি করেছিলেন।’


আর আমরা ’৫২-তে রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে এবং ১৯৭১-এ একটি মুক্তিযুদ্ধ সংগঠিত করে সফল হয়েও বৃহৎ জনগোষ্ঠীর মঙ্গলের জন্য তা করতে পারিনি। ইতিমধ্যে আমরা বিত্তবানদের জন্য টেক্সট বুক বোর্ডের ইংরেজি মাধ্যম, ব্রিটিশ, আমেরিকান, অস্ট্রেলিয়ান নানান কারিকুলামে ইংলিশ মিডিয়ামে পড়াশোনা জায়েজ করেছি; অন্যদিকে বিত্তহীনদের জন্য শিক্ষক ছাড়া, শিক্ষকের বেতন ছাড়া বা অর্ধেক বেতনে বাংলা মাধ্যমে অত্যন্ত কায়ক্লেশে ক্লাস চালিয়ে যেতে বাধ্য করছি বেসরকারি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষকদের। সরকারি স্কুল-কলেজেও আছে এ সমস্যা। এসব প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া আদৌ হচ্ছে কি? ভাষা শিক্ষাসহ কোনো শিক্ষাই বেশির ভাগ শিক্ষায়তনে হচ্ছে না। শিক্ষার্থীরা কোচিং সেন্টারে ভিড় করছে। সেখান থেকে বেরিয়ে আসার জন্যই নাকি নতুন কারিকুলাম তৈরি হয়েছে। অথচ নতুন উদ্দেশ্যে, নতুন কৌশলে সেই কোচিংয়ের আবির্ভাবও হয়ে গেছে। সামগ্রিক শিক্ষাব্যবস্থার উন্নতি না করে শুধু কারিকুলাম পরিবর্তন তো শিক্ষার্থীর উন্নয়ন করতে পারবে না।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us