বাংলাদেশে কিছু মানুষ সবসময় দেখা যায়, বিশেষ করে জাতীয় নির্বাচনের সময় বেশি দেখা যায়, যারা দেখতে বাঙালির মতো, চালচলনে আচার-আচরণেও বাঙালি। কিন্তু তাদের মন শুধু পাশ্চাত্য নির্ভরশীল নয় জীবনাচরণ, বুদ্ধিবৃত্তি, মনোবৃত্তি সবকিছুই পাশ্চাত্যের শেখানো বুলিনির্ভর।
মানবতা, মানবিকতা, বুদ্ধিবৃত্তির চর্চা সবকিছুর মধ্যেই তাদের পরাশ্রয়ী মনোভাবের পরিচয় পাওয়া যায়। জাতীয় নির্বাচন ২০২৪ উপলক্ষে তথাকথিত অভিজাত শ্রেণির পরাশ্রয়ী বুদ্ধিবৃত্তির ধ্বজাধারীরা বেআব্রু হয়ে বাঙালি জাতি উদ্ধারের নামে মাঠে-ময়দানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং গণমাধ্যমে সরব। তারা মন্ত্রতন্ত্র গণমাধ্যমে উপস্থাপন করে জাতিকে বিভ্রান্ত করতে সক্ষম না হলেও পাকিস্তানিজমে বিশ্বাসী ম্রিয়মান কিছু মানুষের মনে উষ্ণতা ছড়িয়ে দিতে কিছুটা হলেও সক্ষমতা অর্জন করেছেন। এদের চোখ এবং মনে শুধু ছানি পড়েনি এরা অত্যন্ত সচেতনভাবেই জাতিকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা থেকে দূরে ঠেলে দেওয়ার জন্য পরিকল্পিতভাবে নিজেদের উপস্থাপন করেন। এরা দেখে এক চোখ দিয়ে। রেলগাড়িতে আগুন দিয়ে মা-সন্তানকে হত্যা করার দৃশ্য দেখে এরা বিচলিত নয়।
ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য একটি শক্তি হরতাল অবরোধ দিয়ে যাচ্ছে। শ্রমজীবী নিম্ন আয়ের মানুষ এই শক্তির তথাকথিত রাজনৈতিক কর্মসূচি উপেক্ষা করে রাস্তায় নেমে এসেছে। রাস্তায় গাড়ি চলছে, হরতাল অবরোধও চলছে। স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস পরীক্ষা সবই হচ্ছে। অফিস, আদালত, ব্যাংক, বিমা কোনো কিছুই বন্ধ নেই। ক্ষমতাকাঙ্ক্ষী শক্তির দলীয় নেতাকর্মী সমর্থক শুভানুধ্যায়ীরা স্কুল, কলেজ, অফিস আদালতে উপস্থিত থেকে দায়িত্ব পালন করছেন। যাদের নির্দেশে শ্রমজীবী নিম্ন আয়ের মানুষের জীবন বিপন্ন হয় তার দায় কে নেবে? ক্ষমতাকাঙ্ক্ষী শক্তি কি এই দায় থেকে মুক্ত। অবশ্য কোনো দায় তারা নেয় না।
বিদ্যুতের জন্য, সারের জন্য কৃষক দাবি করলে তাদের নির্বিচারে তারা হত্যা করেছে। সিনেমা হলে বোমা মেরেছে। সারাদেশে একযোগে বোমা হামলা করে মানুষকে আতঙ্কিত করেছে। একুশে আগস্টের গ্রেনেড হামলার নিষ্ঠুর নির্মমতার কথা বলার অপেক্ষা রাখে না। এই শক্তি কি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য ন্যায়বিচারের জন্য আদর্শ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য এসব করেছিল? হয়তো তাদের তথাকথিত গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার চালচিত্র এমনই!
ক্ষমতাকাঙ্ক্ষী জনবিচ্ছিন্ন আদর্শহীন পাকিস্তানিজমে বিশ্বাসী শক্তি রাজনৈতিকভাবে ব্যর্থ হয়ে জনমনে ভয়ের সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠার জন্য চোরাগুপ্তা হামলার পথ বেছে নিয়েছে। ঘুমন্ত বাসের হেলপারকে পুড়িয়ে মারা, বাসে আগুন দেওয়া, রেললাইন খুলে নেওয়া ইত্যাদি না নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড বেড়েছে। ফলে মানুষের মধ্যে ভয় আছে কিন্তু ভয় উপেক্ষা করে শ্রমজীবী মানুষ প্রতিদিন ছুটে চলছে।
পাকিস্তানিজমে বিশ্বাসী শক্তির নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড করোনা-উত্তর অর্থনীতির চাকা কিছুটা শ্লথ হলেও বন্ধ হয়ে যায়নি। রাজনৈতিকভাবে পরাজিত জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন বিদেশনির্ভর শক্তি জাতীয় নির্বাচন বন্ধ করতে অসমর্থ হয়ে নির্বাচনকে অর্থহীন করার পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে সক্রিয়। নির্বাচনবিরোধী শক্তির অর্থহীন অকার্যকর হরতাল অবরোধ জনগণ থেকে তাদের আরও দূরে ঠেলে দিয়েছে। নিয়মতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল কোনোভাবেই নাশকতা, হঠকারিতা, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড সমর্থন করতে পারে না। নাশকতা হলো দুর্বৃত্ত, দুষ্টু দুর্জনের পথ। এরা দেশ জাতি এবং মানবতার শত্রু।