ঢাকা মেডিকেল কলেজের জরুরি বিভাগের মর্গে গিয়ে দেখা গেল, পুড়ে অঙ্গার হওয়া চারজনের মরদেহ সারি করে রাখা। মর্গের বাইরে দাঁড়িয়ে সেদিকে অপলক তাকিয়ে আছেন মিজানুর রহমান।
সারি করা মরদেহগুলোর মধ্যে একজন তাঁর স্ত্রী নাদিরা আক্তার (৩২), অন্যজন ৩ বছরের ছেলে ইয়াছিন রহমান।
আজ মঙ্গলবার ভোর পাঁচটার পরে রাজধানীর তেজগাঁও স্টেশনে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেসে দুর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনে পুড়ে তাঁরা মারা গেছেন। এ ঘটনায় আরও দুজন নিহত হয়েছেন। তাঁরা পুরুষ। তাঁদের পরিচয় জানা যায়নি।
বেলা ১১টার দিকে কথা হয় মিজানুরের সঙ্গে। বললেন, ‘আমি চিৎকার করে কাঁদতে চাইছি। কিন্তু পারছি না। আমার ভেতরে কী চলছে, এটা বোঝাতে পারব না। আমার তো সবই শেষ হয়ে গেল। কী অপরাধে আমার সব শেষ হয়ে গেল জানি না। আমি কারও কাছে বিচার চাইব না। এখন একটাই চাওয়া, আমার স্ত্রী-সন্তানকে যেন আর কাটাছেঁড়া করা না হয়। শুধু অক্ষত লাশ ফেরত চাই।’
ঢাকার তেজগাঁও এলাকায় হার্ডওয়্যারের ব্যবসা করেন মিজানুর। স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে থাকেন পশ্চিম তেজতুরী বাজার এলাকায়। বড় ছেলে রিয়াদ হাসান ফাহিম স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে। ছেলের বার্ষিক পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর ৩ ডিসেম্বর দুই সন্তান নিয়ে তাঁর স্ত্রী নাদিরা আক্তার গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনায় যান। সেখান থেকেই মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেসে করে ঢাকায় ফিরছিলেন তাঁর স্ত্রী ও দুই সন্তান।