দেশে একদিকে চলছে নির্বাচনের সমারোহ, আরেকদিকে হরতাল, অবরোধ। বিএনপি থেমে থেমে এই হরতাল-অবরোধের ডাক দিয়ে যাচ্ছে। এখন পর্যন্ত মঙ্গলবার ফাঁকা রেখে বিএনপি দফায় দফায় হরতাল-অবরোধের ডাক দিয়ে চলেছে। হরতাল-অবরোধের ‘ডে-অফ’ নিয়ে যথেষ্ট রসিকতার মধ্যেই ৫ নভেম্বর মঙ্গলবার অবরোধের বিরতি দিয়ে দশম দফায় আবার দুদিনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।
গত ২৮ অক্টোবর ঢাকায় মহাসমাবেশ পণ্ড হওয়ার ঘটনায় পরের দিন ২৯ অক্টোবর সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল দেয় বিএনপি। এরপর দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ শীর্ষ পর্যায়ের অনেক নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারপর থেকে সরকারের পদত্যাগ, নির্দলীয় সরকারের অধীন নির্বাচন এবং দলের গ্রেপ্তার হওয়া নেতা-কর্মীদের মুক্তি ও হয়রানি বন্ধের দাবিতে এক-দুই দিন পরপর কখনো অবরোধ, কখনো হরতালের মতো কর্মসূচি দিয়ে যাচ্ছে দলটি।
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনের কর্মসূচি দিয়ে যাচ্ছেন। কর্মসূচি ঘোষণার সময় তিনি আন্দোলন চলতেই থাকবে বলে জানিয়েছেন।
রুহুল কবির রিজভীর এই ঘোষণা অত্যন্ত বিপজ্জনক। তার মানে ক্ষমতাসীনরা মানুক না মানুক, সাধারণ মানুষের যত দুর্ভোগই হোক, আন্দোলন কোনো যৌক্তিক পরিণতি পাক বা না পাক, আন্দোলনের ফলে জানমালের যতই ক্ষতি হোক, তা চলতেই থাকবে! এ ধরনের কথা অত্যন্ত দায়িত্বজ্ঞানহীন। কোনো দায়িত্বশীল নেতা এ ধরনের কথা বলতে পারেন না। সব কিছুর একটা কৌশল থাকা দরকার। একটা মেয়াদ, একটা সুনির্দিষ্ট টার্গেট থাকা দরকার। কোনো আন্দোলন অনির্দিষ্টকাল ধরে চলতে পারে না। হরতাল-অবরোধের মতো ধ্বাসাত্মক ও ক্ষতিকর কর্মসূচি তো নয়ই।
বিশেষত লাখ লাখ শিক্ষার্থী যখন বার্ষিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছে, তখন হরতাল-অবরোধ চালিয়ে যাওয়া, চোরা-গুপ্তা কায়দায় যানবাহনে আগুন দেওয়ার মতো গণবিরোধী কর্মসূচি কিছুতেই মেনে নেয়া যায় না। দেশের এই লাখ লাখ শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবক কতটা বিড়ম্বনা ও ভয় নিয়ে বার্ষিক পরীক্ষার দিনগুলো পার করছে, তা বলে বোঝানো যাবে না।