নির্বাচনে বাইরের থাবা

আজকের পত্রিকা মহিউদ্দিন খান মোহন প্রকাশিত: ০৩ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৬:৫০

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে একটি ভীষণ শঙ্কার কথা বলেছেন সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল। ২৭ নভেম্বর নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির সদস্যদের প্রশিক্ষণ উদ্বোধন করতে গিয়ে তিনি বলেছেন, ‘আমাদের নির্বাচনে কিন্তু বাহির থেকেও থাবা, হাত এসে পড়েছে। তারা থাবা বিস্তার করে রেখেছে। আমাকে যেভাবে ইউনাইটেড স্টেট (যুক্তরাষ্ট্র) কমান্ড করতে পারে, আমি ওয়াশিংটনে গিয়ে হুমকি-ধমকি দিতে পারছি না। আমাদের অর্থনীতি, ভবিষ্যৎ অনেক কিছুই রক্ষা করতে হলে নির্বাচনটাকে ফ্রি, ফেয়ার ও ক্রেডিবল (অবাধ, স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য) করতে হবে।’ (আজকের পত্রিকা, ২৮ নভেম্বর ২০২৩)


সিইসির বক্তব্যের সঙ্গে দ্বিমত প্রকাশের অবকাশ নেই। দেশের রাজনৈতিক বাস্তবতার আলোকে নিরেট সত্যই উচ্চারণ করেছেন তিনি। আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যে রাজনৈতিক সংকট ঘনীভূত হয়ে উঠেছে, তাতে দেশবাসীও শঙ্কিত। কীভাবে এই সংকট মোকাবিলা করা যায়, তা নিয়ে দেশের বিশিষ্টজনেরা নানা মাধ্যমে তাঁদের বিজ্ঞ অভিমত ব্যক্ত করে চলেছেন। কিন্তু সবচেয়ে হতাশাজনক ব্যাপার হলো, তাঁদের সেই সব অভিমতকে রাজনৈতিক দল তথা সেগুলোর নেতৃত্ব খুব একটা পাত্তা দিচ্ছেন না। যে কথাটি নিজেদের পক্ষে যাচ্ছে, সেটাকে সাধুবাদ জানাচ্ছেন, আর যেটা তাঁদের বিপক্ষে যাচ্ছে, সেটার প্রতি নিন্দাবাদে সোচ্চার হয়ে উঠছেন। নির্বাচন নিয়ে এই যে বিভক্তি, তা নিরসনের উপায় নিয়ে সবাই চিন্তিত।


দুই পক্ষের এই বিবাদের মাঝখানে বিদেশি শক্তির অনুপ্রবেশ সমস্যাকে আরও জটিল করে তুলেছে। বিশ্বের প্রভাবশালী কয়েকটি রাষ্ট্র সরাসরি আমাদের রাজনীতি ও নির্বাচন বিষয়ে নাক গলাচ্ছে; যা ক্ষেত্রবিশেষে প্রায় হস্তক্ষেপের পর্যায়ে চলে গেছে। সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল সে কথাই বলেছেন। এই শক্তিগুলোর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন এবং আপত্তি উঠেছে অনেক অগেই। আমাদের নির্বাচন ইস্যুতে দেশটির তৎপরতা আন্তর্জাতিক রীতিনীতি ও রাষ্ট্রাচারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন বলে অভিজ্ঞ মহল মনে করছেন। তাদের কথাবার্তা এবং কথিত ‘পরামর্শ’ শুনলে মনে হওয়া স্বাভাবিক, বাংলাদেশ বোধকরি ওই ‘মোড়ল’ রাষ্ট্রটির উপনিবেশ। তাই তারা যে প্রেসক্রিপশন দেবে, মুমূর্ষু রোগীর মতো আমাদের তা চোখ বুজে গলাধঃকরণ করতে হবে; বিশেষ করে ওই রাষ্ট্রটির বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত যেভাবে দৌড়ঝাঁপ ও দেনদরবারে লিপ্ত হয়েছিলেন, তাতে কারও কারও মনে সংশয় জেগেছিল, তিনি কি একটি ভিন্ন দেশের কূটনৈতিক দায়িত্ব পালনে নিয়োজিত, নাকি আমাদের নির্বাচন তদারকির দায়িত্বপ্রাপ্ত?


তাঁর তৎপরতাকে দেশের সচেতন নাগরিকেরা রাষ্ট্রাচারের ভিয়েনা কনভেনশনের পরিপন্থী বলে আখ্যায়িত করেছেন। অতিসম্প্রতি বিশ্বের আরেক প্রভাবশালী দেশ রাশিয়ার পক্ষ থেকেও একই অভিযোগ উত্থাপন করা হয়েছে। যদিও সেই অভিযোগের জবাবে ওই দেশটির ঢাকার দূতাবাস এক বিবৃতিতে বলেছে, রাশিয়া বিষয়টি ভুলভাবে উত্থাপন করেছে। তবে তাদের বক্তব্যে নৈতিক জোর একেবারেই নেই। কেননা, বিএনপির ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশের আগে ১২ অক্টোবর দুপুরে চুপিসারে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের আমেরিকার দূতাবাসে যাওয়া এবং সেখানে রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সঙ্গে একান্তে বৈঠক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছিল। অনেকের মতে, ওই ঘটনা বাংলাদেশের রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহে একটি পক্ষের প্রতি মার্কিন সরকারের সমর্থনের প্রমাণ বহন করে। যদিও মার্কিন সরকার বারবার বলছে, তারা বাংলাদেশের কোনো বিশেষ দলকে সমর্থন করে না, তবে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন চায়। তাদের এই চাওয়া নিয়ে কারও আপত্তি থাকার কথা নয়। তবে সে জন্য তাদের তৎপরতা হতে হবে প্রকাশ্য এবং তা অবশ্যই কূটনৈতিক শিষ্টাচারের সীমানার মধ্যে। রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের তৎপরতা যে অনেক আগেই সে সীমানা লঙ্ঘন করেছে, সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
ঘটনা প্রবাহ

ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us