জায়েদ খান, একজন বাংলাদেশি অভিনেতা। বড় পর্দায় অভিনয় করেন। বড় পর্দায় দর্শক না পেলেও সাড়ে ছয় ইঞ্চির স্ক্রিনে তিনি আছেন দাপটের সাথে। ক্যামেরা দেখলেই তাঁর মুখে খই ফোটে! শোবিজে তাঁর খবর নেই। তিনি নিজেই খবর তৈরি করেন। খবরের খরায় থাকা গণমাধ্যমের বিনোদন বিভাগ সেগুলোই লুফে নেয়। তিনি আলোচনায় থাকতে চান। আলোচনায় থাকার সহজ তরিকাও জানা আছে তাঁর। তাই দৈনিকই ক্যামেরার সামনে তাঁকে দেখা যায়।
অবশ্য রাজনীতির গরম বাজারে সহজ তরিকা হালে পানি পাচ্ছিল না। তাই নতুন কৌশল। এবার শরীর দিয়ে কসরত শুরু করেছেন তিনি। কথায় আর চিড়ে ভিজছে না, তাই এবার ঘাম ঝরাচ্ছেন। জায়েদ খানের নতুন ট্রেন্ড—ডিগবাজি। মাঠে, মঞ্চে সবখানে তিনি ডিগবাজি দিচ্ছেন। ট্রেন্ডের সঙ্গে থাকার কৌশল যে তিনি ভালোই রপ্ত করেছেন, সেটি মানতেই হবে—ডিগবাজি দিয়ে ভোটের সময়ে খুবই প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছেন জায়েদ খান। একটি রাজনৈতিক দলের মূর্ত প্রতীক হয়ে উঠেছেন যেন!
রাজনীতির মাঠে ডিগবাজিতে যুগ যুগ ধরে একাধিপত্য ধরে রেখেছে জাতীয় পার্টি (জাপা)। দলটির প্রতিষ্ঠাতা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ডিগবাজির জন্য মশহুর ছিলেন। তিনি আর আমাদের মাঝে নেই। কিন্তু অ্যাক্রোবেটিক প্রদর্শনী থেমে নেই। নির্বাচনের আলাপ শুরু হলেই তাঁরা ওয়ার্মআপ শুরু করেন। তাঁরা সব সময় ক্ষমতালগ্ন থাকতে চান। দর কষাকষিতে ওস্তাদ! শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত তাঁরা বিভ্রান্তিকর কথা বলেন। সমাপ্তি টানেন ডিগবাজি দিয়ে!
আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণের তফসিল ঘোষণা হয়ে গেছে। সরকার সংলগ্ন দলগুলো নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছিল আগে থেকেই। কিন্তু জাতীয় পার্টি কিছুই খোলাসা করে না। চেয়ারম্যান জিএম কাদের বিভিন্ন সভা সমাবেশে নির্বাচনে যাবেন না, পরিবেশ নেই ইত্যাদি বলে বেড়াচ্ছিলেন। কণ্ঠ মিলিয়ে যাচ্ছিলেন মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু।
তবে দলের প্রধান পৃষ্টপোষক রওশন এরশাদ প্রথম থেকেই বল আসছেন, যেকোনো পরিস্থিতে তাঁর দল নির্বাচনে যাবে। তাঁরা নির্বাচনমুখী দল। দলে প্রধান পৃষ্ঠপোষক আর চেয়ারম্যানের এখতিয়ার নিয়ে দ্বন্দ্ব মাঝেমধ্যেই প্রকাশ্য হয়।
তফসিলের পর জাতীয় পার্টি তৃণমূলের নেতাদের নিয়ে সভা করে। সেখানে ৫৯ জনের মধ্যে ৫৮ জন বিদ্যমান পরিস্থিতিতে নির্বাচনে না যাওয়ার পরামর্শ দেন। মাত্র একজন বিপরীত অবস্থান নেন। গণমাধ্যমে সেসব এসেছে।
সেই সভায় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেছিলেন, ‘নির্বাচনে গেলে স্যাংশন আসারও আশঙ্কা আছে। এই অবস্থায় যদি আমরা নির্বাচনে যাই, আর যদি পরবর্তীতে সরকার সমস্যায় পড়ে, তাহলে কী হবে? আমরা আর কোনো দলের মুখাপেক্ষী থাকতে চাই না। এখন দলগতভাবে আমরা অনেক শক্তিশালী।’