কাবিলা যুদ্ধে দেশটা বলছে এসওএস: আমাকে বাঁচাও

সমকাল ফারুক ওয়াসিফ প্রকাশিত: ০১ নভেম্বর ২০২৩, ০৯:২৩

রক্তধারা পেছনে ফেরে না। বাংলাদেশ আর ২৮ অক্টোবরের আগের অবস্থায় যেতে পারবে না। ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবরের ঘটনাও আর পেছনে ফেরেনি, ২০২৩ সালেও ফিরবার উপায় রাখা হয় নাই। রাজপথে রক্ত ঝরেছে। এরকম অবস্থাতেই বঙ্গবন্ধু রেসকোর্সের ময়দানে দাঁড়িয়ে প্রথম বাক্যেই বলেছিলেন, ‘আপনারা সবই জানেন এবং বোঝেন।’ এখনও মানুষ সবই জানছে ও বুঝছে। ক্রিকেটে লজ্জাজনক পরাজয়ে আমাদের মন বিষে ভরে যায়, কিন্তু স্বাধীনতার ৫২ বছর পরেও একটা দেশের রাজধানীতে পিটিয়ে মারা হয় পুলিশ, পিটিয়ে মারা হয় বিরোধী কর্মীদের। আর রাস্তায় জ্বলে আগুন। এ কী দেশ হলো আমাদের?


সম্রাট আকবরের নবরত্নের এক রত্ন আবুল ফজল সুবে বাংলার নাম দিয়েছিলেন ‘বুলঘা খানা’। এর অর্থ চির অশান্তির দেশ। ঐতিহাসিক কাল থেকে বাঙালিরা দুই ধরনের অশান্তির জন্ম দিয়ে আসছে: পরাধীন হলে এরা জোট বেঁধে স্বাধীনতার জন্য লড়াই করে। আবার স্বাধীন হওয়ামাত্রই দুই দলে ভাগ হয়ে নিজেদের ধ্বংস করে। জীবজগতে এই স্বভাবটি অ্যামিবার। অ্যামিবা সাবালক হওয়ামাত্রই নিজেকে দুই ভাগ করে ফেলে। অ্যামিবার সাথে আমাদের আরেকটি মিল, দেহে মস্তিষ্ক নামক কোনো পদার্থ নেই। তবে অ্যামিবাও অন্তত ভ্রাতৃঘাতী যুদ্ধ করে না; আমরা করি। আমাদের ইতিহাস তাই বিভক্ত হওয়ার ইতিহাস, নির্বোধের উত্তেজনার ইতিহাস।


এই নির্বোধ উত্তেজনাই ছিল বাংলা সিনেমার স্বর্ণযুগের রসায়ন। সেসব সিনেমায় দেখা যেত দেশ নাই রাষ্ট্র নাই সমাজ নাই– আছে কেবল কাবিলা বা গোত্র। প্রাগৈতিহাসিক এ রকম গোত্র দুটির নাম আঙ্গু কাবিলা আর মাঙ্গু কাবিলা। আঙ্গু আর মাঙ্গু কাবিলার মধ্যে বিরোধের কোনো শেষ নেই। নতুন হলো নায়িকা নিয়ে বিবাদ। ছবিজুড়ে নাচ-গানে ভরপুর দৃশ্যের সঙ্গেই দেখা যায় দুই গোত্রপতির হুংকার এবং লাঠি-বল্লম-তলোয়ার নিয়ে মারামারি। আঙ্গু কাবিলা বেশি শক্তিশালী তাদের নেতা নায়ক জসিম, আর মাঙ্গু কাবিলার দুর্বল নেতা ওয়াসিম। ওয়াসিম-জসিমের মারামারি চলে, মাঝেমধ্যে তারা বনের বাঘ পুড়িয়ে ভোজ খায়! তো পরিচালকের অসাবধানতায় একটি দৃশ্যে দেখা গেল, বাঘ-ভোজসভার পেছন দিয়ে চলে যাচ্ছে আধুনিক গাড়ি। তেমনি একবিংশ শতাব্দীর ডিজিটাল বাংলাদেশের মঞ্চে আমরা দেখতে পাচ্ছি মান্ধাতা আমলের লেঠেল-লড়াই। তবে এই লড়াই সিনেমার চেয়েও নিষ্ঠুর: কারণ এখানে বনের বাঘের বদলে দেশের মানুষকে পুড়িয়ে ও গুলি করে ক্ষমতার ভোজে দেওয়া হচ্ছে! অবশ্য বাংলাদেশিরা নিজেদের রয়েল বেঙ্গল টাইগার মনে করে, ক্রিকেট দলের প্রতীকও বাঘ। সেই বাঘটাই আসলে দেশ, যাকে পোড়ানো হচ্ছে আর ওই নায়িকা হলো রাষ্ট্রক্ষমতা, যার জন্য চলছে ওয়াসিম-জসিমের কাবিলাযুদ্ধ। ওদিকে যতই টানেল আর উড়াল সড়ক বানানো হোক, সুষ্ঠু নির্বাচন, সুশাসন আর নাগরিকের মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত না হলে সভ্যতা দেশকে বাইপাস করেই চলে যাবে ও যাচ্ছে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
ঘটনা প্রবাহ

ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us