২০১৯ সাল থেকে শিক্ষা উপমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন চট্টগ্রাম-৯ আসনের সংসদ সদস্য মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। দেশের শিক্ষা খাতে গত কয়েক বছরে নানা উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। সরকারের এসব উদ্যোগ নিয়ে শিক্ষাসংশ্লিষ্টদের মধ্যে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা রয়েছে। নতুন শিক্ষাক্রম, প্রতি জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন, ছাত্ররাজনীতিসহ দেশের শিক্ষাসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বণিক বার্তার সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি।
আওয়ামী লীগ সরকারের পক্ষ থেকে প্রতি জেলায় একটি করে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের কথা বলা হয়েছিল। এরই মধ্যে ৩২ জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হয়েছে এবং আরো কয়েকটি জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের কাজ চলছে। জেলায় জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের এ উদ্যোগের সম্ভাবনা এবং চ্যালেঞ্জগুলো কী কী?
মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল: উচ্চশিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে আমাদের দেশের শিক্ষার্থীদের একটি বড় অংশেরই লক্ষ্য থাকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। অল্পসংখ্যক বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে এ শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার সুযোগ দেয়া সম্ভব নয়। তাই উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে অধিক শিক্ষার্থীকে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা বৃদ্ধি প্রয়োজন ছিল। আরেকটি বিষয় হলো, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের একার পক্ষে কয়েক হাজার কলেজকে সঠিকভাবে মনিটরিং সম্ভব নয়, যার ফলে এদের মানের অবনমন ঘটছিল। প্রধানমন্ত্রী যখন জেলায় জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের ঘোষণা দিয়েছিলেন তখন অধিকসংখ্যক শিক্ষার্থীকে উচ্চশিক্ষার সুযোগ দেয়ার পাশাপাশি আরেকটি মুখ্য উদ্দেশ্য ছিল প্রতি জেলার কলেজগুলোকে ওই জেলার বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করে মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করা। এ বিষয়ে একটি অধ্যাদেশও জারি করা হয়েছিল। এটি বাস্তবায়ন হলে কলেজগুলোর শিক্ষার মানের উন্নয়ন হবে।
তবে একটি বিশ্ববিদ্যালয় মানে তো শুধু অবকাঠামো নির্মাণ নয়। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় শিক্ষক নিশ্চিত করতে হবে, প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে, যুগোপযোগী কারিকুলাম নিশ্চিত করতে হবে। আমাদের দেশে শিক্ষক সংকট দীর্ঘদিনের সমস্যা। আমরা এ সমস্যা থেকে বের হয়ে আসতে চেষ্টা করছি। জাপান তাদের উচ্চশিক্ষার মানোন্নয়নে বিদেশী শিক্ষক এনেছিল। প্রয়োজনবোধে আমাদেরও তেমন করতে হবে। বিশেষত আমাদের দেশের এমন অনেক শিক্ষক রয়েছেন যারা বিদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াচ্ছেন। আমরা যাতে তাদের মেধাকে আমাদের দেশেও কাজে লাগাতে পারি এ কারণে ব্লেন্ডেড এডুকেশন সিস্টেম চালু করছি। এর ফলে এসব মেধাবী শিক্ষক আমাদের দেশের শিক্ষা কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে পারবেন এবং তাদের মেধা ও অভিজ্ঞতার মাধ্যমে আমাদের উচ্চশিক্ষার উন্নয়ন ঘটবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কারিকুলামকেও যুগোপযোগী এবং কর্মক্ষেত্রের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণের চেষ্টা করছি। আমরা বিভিন্ন আন্তর্জাতিক অ্যাক্রেডিটেশন নিয়ে কাজ করছি। ইঞ্জিনিয়ারদের জন্য ওয়াশিংটন অ্যাকোর্ডের অ্যাক্রেডিটেশন লাভের চেষ্টা চলছে। এটি পেলে দেশের রেজিস্ট্রেশন ব্যবহার করেই তারা আন্তর্জাতিক কর্মক্ষেত্রে সুযোগ পাবেন।