বিশ্বব্যাপী শুরু হয়েছে খাদ্য সংকট। ইউক্রেন যুদ্ধের ধোয়া দক্ষিণ এশিয়াসহ উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যবিত্তের রান্নাঘরে ঢুঁকে জীবন ও জীবিকাকে দুর্বিষহ করে তুলেছে। খাদ্য সরবরাহ শৃঙ্খল ব্যাহত হওয়ায় দ্রব্যমূল্য বেড়েছে লাগামহীনভাবে। বিপুলহারে বেড়েছে কৃষিতে ব্যবহৃত রাসায়নিক দ্রব্যাদির দাম। দীর্ঘস্থায়ী প্রাণঘাতী মহামারি কোভিডের পরে- ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ক্রমাগত আঁচ পাচ্ছে এই সমস্যার। প্রশ্ন উঠছে, ভারতের গম রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা ও সম্প্রতি চাল রপ্তানির বন্ধ করা ঠিক কতটা প্রভাব ফেলবে বাংলাদেশে?
খাদ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ এ বছর প্রায় সাত লাখ টন গম ও পাঁচ লাখ টন চাল আমদানি করতে চায়। খাদ্য শস্যের ফলন ভালো হওয়ায় এই দুই পণ্যের আমদানির লক্ষ্যমাত্রা কিছুটা কমিয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের চাল ও গম আমদানির বড় উৎস ভারত। ইতিমধ্যে ভারত আতপ চাল রপ্তানি নিষিদ্ধ ও সেদ্ধ চাল রপ্তানিতে ২০% শুল্ক বসিয়েছে; যা ভারতের ওপর নির্ভরশীল দেশগুলোতে তৈরি করেছে বাড়তি উদ্বেগ। বাংলাদেশও তার ব্যতিক্রম নয়।
গম বাংলাদেশের দ্বিতীয় প্রধান খাদ্য শস্য। দেশে শ্রমিকদের প্যাকেট জাত রুটি দেওয়ার প্রচলনও বেড়েছে। বাংলাদেশের মোট চাহিদার ৮০% এর বেশি গম আসে ভারত থেকে। বিশ্বে ভারত গম উৎপাদনে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকলেও বর্তমানে মজুত ও চাহিদার ভিত্তিতে মোটেই রপ্তানির অনুকূল মনে করা যাচ্ছে না। বিশ্বের রুটির ঝুড়ি খ্যাত ইউক্রেন যুদ্ধের পর ভারতের কম দামের গমের জন্য মিশরের মতো বেশ কয়েকটি দেশ আগ্রহ দেখায়। ভারত সাম্প্রতিককালে বাংলাদেশ, ওমান, কাতার, শ্রীলঙ্কা, দক্ষিণ কোরিয়া ও মিশরের গমের চাহিদা পূরণ করে আসছে; অভ্যন্তরীণ মজুত লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে ও দেশের বাজারে দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে গত বছর গম রপ্তানির ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করে ভারত।