২০২২ সালের শুরু থেকে এ পর্যন্ত ডলারের বিপরীতে টাকার বিনিময় হারে অবমূল্যায়ন হয়েছে ২৭ শতাংশের বেশি। সামনের দিনগুলোয় এ ধারা অব্যাহত থাকার আশঙ্কা রয়েছে। দেশের সার্বিক অর্থনীতিতেও এর প্রভাব এখন ক্রমেই জোরালো হচ্ছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) প্রক্ষেপণ অনুযায়ী, চলতি ২০২৩ পঞ্জিকাবর্ষে (জানুয়ারি-ডিসেম্বর) বাংলাদেশের অর্থনীতির আকার কমতে পারে প্রায় ৪০ বিলিয়ন ডলার। এক্ষেত্রে বড় প্রভাবকের ভূমিকা রাখতে যাচ্ছে ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন।
আইএমএফের তথ্যভাণ্ডারে তুলে ধরা পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২১ সালে চলতি মূল্যে বাংলাদেশের জিডিপির পরিমাণ ছিল ৪১ হাজার ৬২৬ কোটি ৫০ লাখ (৪১৬ বিলিয়ন) ডলার। ২০২২ সালে এটি বেড়ে দাঁড়ায় ৪৬ হাজার ২০ কোটি ১০ লাখ (৪৬০ বিলিয়ন) ডলারে। সেখান থেকে ৩ হাজার ৯৬৯ কোটি (৩৯ দশমিক ৬৯ বিলিয়ন) ডলার কমে চলতি ২০২৩ সাল শেষে বাংলাদেশের জিডিপির আকার দাঁড়াবে ৪২ হাজার ৫১ কোটি ৬০ লাখ (৪২৫ বিলিয়ন) ডলারে।
চলতি বছর বাংলাদেশের জিডিপি কমলেও পরের বছরগুলোয় তা বাড়বে বলে আইএমএফের পূর্বাভাসে উঠে এসেছে। সংস্থাটির হিসাব অনুযায়ী, ২০২৪ পঞ্জিকাবর্ষ শেষে দেশের জিডিপির আকার দাঁড়াবে ৪৬ হাজার ৯৩৪ কোটি (৪৬৯ বিলিয়ন) ৬০ লাখ ডলারে। ২০২৫ সাল শেষে তা ৫২ হাজার ৫২৯ কোটি (৫২৫ বিলিয়ন) ডলারে উন্নীত হবে।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, সংকোচনমূলক আর্থিক ও মুদ্রানীতির কারণে দেশের বেসরকারি খাতের শিল্প উৎপাদন ও ভোগে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। ডলার সংকটে কাঁচামাল আমদানিতে প্রয়োজনমাফিক এলসি খুলতে পারছেন না শিল্পোদ্যোক্তারা। জনসাধারণের ভোগ প্রবণতায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে মূল্যস্ফীতি। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি এখন সামষ্টিক অর্থনীতির প্রতিকূলে। আবার টাকার ক্রমাগত অবমূল্যায়নও ডলারের হিসাবে অর্থনীতির আকারকে কমিয়ে দিচ্ছে।