প্রেম-ভালোবাসা সুন্দর। পক্ষান্তরে ছিনতাই-সন্ত্রাস কুৎসিত। ঢাবি কর্তৃপক্ষ প্রেমের বিরুদ্ধে যতটা তৎপর; ক্যাম্পাসে সন্ত্রাস-ছিনতাই-যৌন নিপীড়নের বিরুদ্ধে ততটা সজাগ কি? প্রাপ্তবয়স্ক ছেলেমেয়ের প্রেমে দোষের কিছু নেই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সবুজ চত্বর যেমন অনেক আন্দোলন-সংগ্রামের জ্বলন্ত সাক্ষী, তেমনি এ ক্যাম্পাস অসংখ্য প্রেমিক-প্রেমিকার ভালোবাসারও সাক্ষী। ঢাবির সার্জেন্ট জহুরুল হক হলে বসে বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী হেলাল হাফিজ লিখেছিলেন, ‘এখন যৌবন যার, মিছিলে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়/ এখন যৌবন যার, যুদ্ধে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়।’ তাঁর এ কবিতা প্রেরণা জুগিয়েছিল ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান, মুক্তিযুদ্ধ, স্বৈরাচারবিরোধীসহ প্রগতিশীল সব আন্দোলনে। ছাত্রজীবনে লেখা এ কবিতা তারকাখ্যাতি এনে দিয়েছিল তাঁকে। যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানিয়েই থেমে থাকেননি হেলাল হাফিজ। ফেরিওয়ালা কবিতায় তিনি লিখেছেন– ‘প্রেমের কষ্ট ঘৃণার কষ্ট নদী এবং নারীর কষ্ট/ অনাদর ও অবহেলার তুমুল কষ্ট,/ ভুল রমণী ভালোবাসার/ ভুল নেতাদের জনসভার/ …কষ্ট নেবে কষ্ট।’ হেলাল হাফিজ চিরকুমার হলেও প্রেমহীন নন।
কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ বলেছেন, ‘মানুষকে ঘৃণা করার অপরাধে কখনো কাউকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়নি, অথচ মানুষকে ভালোবাসার অপরাধে অতীতে অনেককেই হত্যা করা হয়েছে। ভবিষ্যতেও হয়তো হবে।’ হুমায়ূন আহমেদের ভবিষ্যদ্বাণীর আংশিক প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে। তিনি যে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও শিক্ষক ছিলেন, সেখানে ভালোবাসার অপরাধে ১৪ শিকের মধ্যে বন্দি করার অভিযান পরিচালিত হতে দেখা গেছে। মঙ্গলবার জুটি তাড়াতে অভিযান চালিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি। আটক করা হয়েছিল ১৬ জনকে। এক ছাত্রনেতার হস্তক্ষেপে ছাড়া পান ১৬ প্রেমিক-প্রেমিকা।