ভিয়েনা কনভেনশন এবং উন্নয়ন অংশীদারদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক

ডেইলি স্টার মাহফুজ আনাম প্রকাশিত: ২৮ জুলাই ২০২৩, ১৭:৩৪

হিরো আলম ভাগ্যবান মানুষ। উপনির্বাচনে জয় না পেলেও তিনি নিশ্চিতভাবেই যতটা প্রাপ্য, তারচেয়ে অনেক বেশি মনোযোগ পেয়েছেন। অনেক দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের 'বাংলাদেশ ডেস্ক'-এ তার নামটি পরিচিত হয়ে উঠেছে।


আমাদের চোখে এটা 'চায়ের কাপে ঝড়' তোলার মতো ঘটনা। এর জন্য পশ্চিমের ১৩ রাষ্ট্রদূতের যৌথ বিবৃতি দেওয়ার যেমন দরকার ছিল না, তেমনি এই বিবৃতির জন্য পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর সেই রাষ্ট্রদূতদের ডেকে নেওয়ারও প্রয়োজন ছিল না। প্রথমে যৌথ বিবৃতি, তারপর জাতিসংঘের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক সমন্বয়ককে 'তলব', এরপর ১৩ রাষ্ট্রদূতকে ডাকা—এর সবই উভয়পক্ষের অতি প্রতিক্রিয়া দেখানোর উদাহরণ।


সম্মানের সঙ্গেই বলতে চাই, আমাদের মতে এই ঘটনাটি রাষ্ট্রদূতদের যৌথ বিবৃতি দেওয়ার মতো বিষয় নয়। যৌথ বিবৃতির ব্যবহার খুবই কম হওয়া উচিত। তারা যে বার্তা দিতে চেয়েছেন, তা ভিন্নভাবেও দেওয়া যেত।


অপরদিকে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিক্রিয়া আরও কাঠামোগত সূক্ষ্ম হতে পারত। কূটনীতিতে অনেক সময় 'কী' বলা হচ্ছে সেটার চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে 'কীভাবে' বলা হচ্ছে। সামগ্রিকভাবে আমরা অস্বীকার করলেও বহির্বিশ্ব বিষয়টিকে এভাবেই দেখবে যে আমরা এই রাষ্ট্রদূতদের 'তলব' করেছি। এর কি প্রয়োজন ছিল?


শাহরিয়ার আলমের প্রেস ব্রিফিং থেকে আমরা বুঝতে পেরেছি, গত বুধবার ১৩ রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠকের মূল কারণ ছিল তাদেরকে ভিয়েনা কনভেনশনের বিধান স্মরণ করিয়ে দেওয়া, যা তারা যৌথ বিবৃতির মাধ্যমে লঙ্ঘন করেছেন। যৌথ বিবৃতিটিকে 'অকূটনৈতিক আচরণ' হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে, যা 'বস্তুনিষ্ঠতা, নিরপেক্ষতা ও পক্ষপাতহীনতা' বর্জিত এবং এর ফলে 'কেবলই পারস্পরিক আস্থার সংকট তৈরি করবে'।


ওয়েস্টার্ন গ্রুপ নামে পরিচিত যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, ডেনমার্ক, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, নেদারল্যান্ডস, নরওয়ে, স্পেন, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের এই ১৩ রাষ্ট্রদূতকে একসঙ্গে আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে খুব কমই ডেকে নেওয়া হয়েছে। কোনো অবস্থাতেই আমরা আমাদের সম্পর্ককে 'আস্থার সংকটে'র দিকে যেতে দিতে পারি না।


পররাষ্ট্রমন্ত্রী গণমাধ্যমকে প্রধান অপরাধী বানিয়ে বলেছিলেন, 'আমাদের মিডিয়া তাদেরকে (রাষ্ট্রদূতদের) অযথা গুরুত্ব দেয়, যা তারা উপভোগ করে। এতে করে তারা নিজেদের এ দেশের রাজা মনে করে এবং সবকিছু নিয়ে মন্তব্য করে।' বিদেশিদের খবর খুব বেশি প্রচার করার জন্য সাংবাদিকদের সমালোচনা করে এবং তাদের দেশে পুলিশ কী করে তা খুঁজে বের করার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, 'আপনারা দেখেছেন ইংল্যান্ডে পুলিশ কীভাবে নির্যাতন করে? আপনারা দেখেছেন আমেরিকায় পুলিশ কীভাবে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।' বর্তমানে বাংলাদেশে যে ইস্যুগুলো তৈরি হয়েছে তার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য পুলিশের কাজের সম্পর্ক কী? এসব দেশের পুলিশের দিকে নজর দিলে আমাদের বর্তমান সমস্যার সমাধান কীভাবে হবে? রাষ্ট্রদূতদের বিরুদ্ধে নিজেদেরকে বাংলাদেশের 'রাজা' ভাবার অভিযোগ তোলা এক ধরনের অপরিপক্কতার উদাহরণ, যা বহির্বিশ্বের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে ভালো কিছু বয়ে আনতে পারে না।


উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে, দীর্ঘদিনের দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কগুলোকে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে পরীক্ষার মধ্যে ফেলে দেওয়া হচ্ছে। নির্বাচনের বাইরেও আরও অনেক কিছু আছে। ব্যবসা-বাণিজ্য, বিনিয়োগের মতো আরও অনেক কিছু আছে, যা নির্বাচনের পরেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে থাকবে। আমরা সেগুলোর কথা ভাবছি বলে মনে হচ্ছে না।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
ঘটনা প্রবাহ

ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us