ভারতের রাজনীতিতে প্রায় দশ বছর আগে হঠাৎ করে আম আদমি পার্টির উত্থান সেই দেশের নাগরিক সমাজে ব্যাপক সাড়া ফেলেছিল। অরবিন্দ কেজরিওয়াল (Arvind Kejriwal)-এর নেতৃত্বে এই দল খোদ দিল্লিতে সাফল্য পেয়েছিল কারণ দলটি রাজনীতিক ও আমলাদের দুর্নীতির বিরুদ্ধে কার্যত বিদ্রোহ ঘোষণা করে মাঠে নেমেছিল। এবং এখন পর্যন্ত মানুষ কেজরিওয়ালের সহজ, সরল, সাধারণ জীবন দেখে আসছে ইতিবাচকভাবে।
বাংলাদেশেও হঠাৎ হঠাৎ নতুন রাজনৈতিক দল গজায়, কিন্তু বড় হতে পারে না, সাফল্য পায় না। একটা কারণ হয়তো এমন যে, দেশের মানুষ দুর্নীতিগ্রস্ত রাজনীতিকদের আদতে প্রত্যাখ্যান করে না। তবে বড় কারণটি এই যে, নতুন নতুন দলের নেতাদের নিজস্ব সৎ ভাবমূর্তি দৃশ্যমান হয় না এবং দলগুলোর সাংগঠনিক সক্ষমতাও সেইভাবে তৈরি হয় না।
সাম্প্রতিককালের আলোচিত দল গণ অধিকার পরিষদ, যেটি গড়ে উঠেছিল মাঠের আন্দোলন থেকে এবং তরুণদের দ্বারা। এই দলও ভেঙে গিয়েছে নিজেদের মধ্যকার নানা বিরোধে এবং দলের আসল ব্যক্তি নুরুল হকের বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে দলের ভেতর থেকে। কোনো কোনো গণমাধ্যমও এই বিষয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন করেছে।
স্বাভাবিকভাবেই বাংলাদেশের রাজনীতিতে দেয়ালের লিখন পাল্টায় না। নির্বাচন কমিশন রাজনৈতিক দল নিবন্ধন দেয়। এইবার হঠাৎ দুটি অচেনা নামের দল নিবন্ধন পেয়ে গেল। এরা হলো—বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম) আর বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (বিএসপি)। আমি রাজনীতির খোঁজ রাখি এবং আমি কখনো এই দুটি দলের নাম শুনিনি।
নিবন্ধনের দৌড় থেকে ছিটকে পড়াদের তালিকায় আছে মাহমুদুর রহমান মান্নার নাগরিক ঐক্য, গণঅধিকার পরিষদ এবং জামায়াতে ইসলামী থেকে বেরিয়ে আসা নেতাদের নিয়ে গঠিত এবি (আমার বাংলাদেশ) পার্টি। অচেনা দুটি দল কেন পেল আর বাকিরা কেন পেল না, সেটা নির্বাচন কমিশনই বলতে পারবে।