একটা সময় ছিল, যখন বাংলাদেশ ঈদুল আজহায় কোরবানির পশুর জন্য ভারত, মিয়ানমার ও নেপালের ওপর নির্ভর করত। প্রথম বারের মতো ২০১৪ সালে বাংলাদেশে কোরবানির পশু নিয়ে ব্যাপক সংকট তৈরি হয়েছিল। মূলত তখন থেকেই বাংলাদেশ সরকার ও খামারিরা উপলব্ধি করেন যে দেশের ভেতরেই গবাদি পশুর সংখ্যা বাড়াতে হবে। তখন থেকেই প্রাণিসম্পদ খাতে সরকারের প্রচেষ্টা এবং খামারি ও গবেষকদের অবদানের জন্যই আজ বাংলাদেশে কোরবানির পশুর জন্য পরনির্ভরশীলতা কমে এসেছে, এমনকি গত কয়েক বছর ধরে কোরবানির পশু উদ্বৃত্ত থাকছে। মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, এ বছর কোরবানির জন্য ১ কোটি ২৫ লাখ ৩৬ হাজার ৩৩৩টি পশু প্রস্তুত রয়েছে। এ বছর কোরবানির জন্য প্রয়োজন হবে ১ কোটি ৩ লাখ ৯৪ হাজার ৭৩৯টি পশু। চলতি বছর কোরবানির পশু উদ্বৃত্ত থাকবে ২১ লাখ ৪১ হাজার ৫৯৪টি।
এখন পশু উদ্বৃত্ত থাকলেও ভোক্তাদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে ভেজাল (অর্গানিক নয়) পশু নিয়ে। ভালো দাম পাওয়ার আশায় প্রতি বছর কোরবানির ঈদ সামনে রেখে একদল অসাধু ব্যবসায়ী কয়েক সপ্তাহ আগে থেকেই গরু মোটা করার জন্য বিভিন্ন ধরনের ওষুধ ও রাসায়নিক দ্রব্য মাত্রাতিরিক্ত প্রয়োগ করেন। এতে গরুর শরীরে অতিরিক্ত পানি জমতে শুরু করে। ফলে গরুর কিডনি, ফুসফুস, পাকস্থলী ও যকৃত্ নষ্ট হতে থাকে এবং গরুটি মারাত্মক অসুস্থ হয়ে যায়। পশুকে স্টেরয়েড বা হরমোন প্রয়োগ করা হলে তা পশুর প্রস্রাব বন্ধ করে দেয়। ফলে পশুর চামড়ার নিচে পানি জমতে থাকে এবং পশুর শরীরের সেলগুলো ফুলে যাওয়ায় পশুকে স্বাস্থ্যবান দেখায়। এই প্রক্রিয়া পশুর জন্য যেমন ক্ষতিকর, তেমনি ঐ পশুর মাংস যারা খায় তাদের জন্যও ক্ষতিকর। তবে মত্স্য খাদ্য ও পশু খাদ্য আইনের ধারা ১৪তে বলা হয়েছে, গবাদিপশুর হূষ্টপুষ্টকরণে কোনো ধরনের হরমোন, স্টেরয়েড ও ক্ষতিকর রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ।