একসঙ্গে এত টাকা পকেটে নিয়ে বাজারে আসব কীভাবে? অনেককেই এমন বলতে শোনা যায়। কিন্তু ক্যাশলেস লেনদেনের কল্যাণে বিশ্বের অনেক দেশের মতো বাংলাদেশেও এই আশঙ্কা কমে গেছে অনেকখানি। বর্তমানে নিরাপদ লেনদেনে ঝামেলাহীন ও সহজ জীবনযাপনের অন্যতম অবলম্বন ব্যাংক কার্ড।
কার্ড দিয়ে অর্থ পরিশোধের এ ধারণা কবে থেকে শুরু? উত্তর খুঁজতে ফিরে যেতে হবে ১৮৮৭ সালে। অর্থ পরিশোধের এমন চিত্রকল্প সর্বপ্রথম সবার সামনে তুলে ধরেন আমেরিকান ঔপন্যাসিক এডওয়ার্ড বেল্যামি, তাঁর কল্পকাহিনিভিত্তিক উপন্যাস ‘লুকিং ব্যাকওয়ার্ড’-এ। উপন্যাসে ‘ক্রেডিট কার্ড’ শব্দটি ১১ বার ব্যবহার করেন।
ক্রেডিট কার্ডের প্রাথমিক যাত্রা শুরু ১৯২৮ সালের দিকে। একটি আয়তাকার ধাতব পাত দিয়ে বানানো, নাম ছিল ‘দ্য চারগা প্লেট’। সেই সময়ের বড় বড় ব্যবসায়ীরা তাঁদের সুপরিচিত ও বিশ্বস্ত ক্রেতাদের প্রদান করত। এর আগে অবশ্য ১৯২০ সালের দিকে ডিপার্টমেন্টাল স্টোর ও তেল কোম্পানিগুলো গ্রাহকদের জন্য ‘কার্টেসি কার্ড’ চালু করেছিল। এরপর ১৯৩৪ সালে ‘আমেরিকান এয়ারলাইনস’ এবং ‘এয়ার ট্রান্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশন’ কাস্টমারদের বিমানের টিকিট ক্রয় সহজলভ্য করতে ‘বাই নাউ অ্যান্ড পে লেটার’ অর্থাৎ ‘এখন কেনা, পরে পরিশোধ’—সুবিধার মাধ্যমে বিশ্ববাসীর সামনে এয়ার ট্রাভেল কার্ডের পরিচয় করিয়ে দেয়। সর্বশেষ অস্বস্তিকর এক ঘটনাক্রমে জন্ম নেয় এখনকার প্রচলিত ক্রেডিট কার্ডের।
১৯৪৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের একটি রেস্তোরাঁয় নৈশভোজ করতে গিয়েছিলেন ব্যবসায়ী ফ্রাঙ্ক ম্যাকনামারা। কিন্তু খাওয়াদাওয়ার পর বিল পরিশোধের সময় ভদ্রলোক বুঝতে পারলেন ভুল করে ওয়ালেট বা মানিব্যাগ আনেননি। তখন তিনি খাবারের বিল পরে পরিশোধ করার প্রতিশ্রুতিতে রেস্তোরাঁটির সঙ্গে একটি চুক্তি সই করেন। তবে এমন কথাও প্রচলিত আছে, ম্যাকনামারা তাঁর স্ত্রীকে কিছু নগদ অর্থ নিয়ে রেস্তোরাঁয় আসতে বলেছিলেন।