মুসলিম সম্প্রদায়ের দ্বিতীয় বৃহত্তম পার্বণ কোরবানির ঈদ। অতীত আর বর্তমানের এই ঈদ পালনে বিস্তর পার্থক্য রয়েছে। এখন কোরবানি ঈদে পশু কোরবানি দেওয়া ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এটাও সত্য, কোরবানি দেওয়ার সামর্থ্য খুব কম লোকেরই থাকে। আমাদের মোট জনসমষ্টির ১৫ ভাগ পরিবারে কোরবানি ঈদ আসে উদযাপনের বারতা নিয়ে। বাকি ৮৫ ভাগ সংখ্যাগরিষ্ঠদের পক্ষে আর্থিক কারণে কোরবানি দেওয়া সম্ভব হয় না। গ্রামে ভাগে কোরবানি দেওয়ার প্রচলন অতীতেও ছিল, আজও আছে। কিন্তু সামাজিক জীবনে পরস্পর বিচ্ছিন্ন শহরের মানুষেরা ভাগে কোরবানি দেয় না। দিলেও নিম্নমধ্যবিত্ত শ্রেণির খুবই নগণ্য অংশ। আমাদের দেশে কোরবানির পশুর ক্ষেত্রে গরুই বেশি। নিম্নমধ্যবিত্তদের একটি অংশ অর্থনৈতিক কারণে খাসি কোরবানি দেয়। আমাদের দেশে কোরবানি দেওয়া–না দেওয়ার ওপর মানুষের সামাজিক মর্যাদাও নির্ভর করে। এই সামাজিক মর্যাদা রক্ষায় ঋণ করেও অনেকে কোরবানি দেন। কোরবানির গরু নিয়েও এক ধরনের সামাজিক প্রতিযোগিতা লক্ষ করা যায়। কে কয়টি এবং কত বড় গরু কোরবানি দিচ্ছে এ নিয়ে ঠান্ডা প্রতিযোগিতাও দেখা যায়। অর্থাৎ ধর্মীয় বিধানের চেয়েও সামাজিক মর্যাদার অংশ হয়ে পড়েছে কোরবানি দেওয়া-না দেওয়ার বিষয়টি।