ওডিশার বালাশোরে ২ জুন তিন ট্রেনের মধ্যে সংঘর্ষের ফলে ২৭০ জনের বেশি নারী, পুরুষ ও শিশু মারা গেছে। এ ধরনের ট্র্যাজেডির পরে যেমনটা প্রায়ই হয়ে থাকে, এ ক্ষেত্রেও তা-ই হয়েছে। রেলওয়ের কর্মকর্তারা এবং রাজনৈতিক নেতারা দুর্ঘটনাস্থলে চলে আসেন এবং শোক প্রকাশ করেন। তদন্ত কমিশন গঠন করা হয়, মৃতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ এবং আহতদের চিকিৎসা ও ত্রাণ নিশ্চিত করার আশ্বাস দেওয়া হয়। কিন্তু জনগণ এর চেয়ে অনেক বেশি আশা করে। সরকারের কাছে নিরাপদ ভ্রমণ দাবি করার অধিকার তাদের আছে। কিন্তু মোদি সরকারের অধীনে সেই অধিকার নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে পড়েছে।
পরিবহনের ক্ষেত্রে রেলওয়েকে ভারতের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ১৮৫৩ সালে ব্রিটিশ শাসনামলে ভারত রেলওয়ে বিশ্বমানচিত্রে স্থান পায়। অবশ্যই মানুষকে আরাম দেওয়ার উদ্দেশ্য ঔপনিবেশিক শাসকদের কখনোই ছিল না, রেলওয়ের প্রবর্তনের উদ্দেশ্য ছিল মূলত দ্রুত পণ্য এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় পাঠানোর সুবিধার জন্য। ব্রিটিশরা সেই তখন থেকে রেলওয়ের নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণে প্রচুর বিনিয়োগ করেছিল। এই উন্নয়নের ওপর মন্তব্য করে কার্ল মার্ক্স ১৮৫৩ সালে লিখেছিলেন, রেলওয়ে এবং ইংরেজি শিক্ষার প্রবর্তন করে যদিও ‘জঘন্যতম স্বার্থ’ নিয়ে ইংল্যান্ড মহান সামাজিক পরিবর্তন আনতে ‘ইতিহাসের অচেতন হাতিয়ার’ হয়ে উঠেছে। তাঁর বিশ্লেষণ সঠিক ছিল। কারণ এই পদক্ষেপগুলো ভারতের জনগণকে কাছাকাছি আনতে অবদান রেখেছিল এবং অবশেষে স্বাধীনতা আন্দোলনকে শক্তিশালী করার পথ প্রশস্ত করেছিল।