ধূমপান ও তামাক ছাড়তে সবচেয়ে জরুরি হলো ইচ্ছাশক্তি। এ ক্ষেত্রে আমাদের দেশে মোক্ষম ও উপযুক্ত সময় হলো রমজান মাস। এই মাসে ধাপে ধাপে ধূমপান ছাড়তে বিভিন্ন পরামর্শ দিয়েছেন অধ্যাপক ডা. অরূপ রতন চৌধুরী, সাম্মানিক জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা, ডিপার্টমেন্ট অব ডেন্টাল সার্জারি, বারডেম
রমজানের সংযম, নিয়মানুবর্তিতা ও পবিত্রতা মানুষের মনোবল ও দৃঢ় সংকল্প বজায় রাখার পক্ষে সহায়ক। ধূমপায়ী, তামাকপাতা ও জর্দাসেবীরা এই মোক্ষম সুযোগ কাজে লাগাতে পারেন। কারণ একজন মানুষ যখন দিনের প্রায় ১৫ থেকে ১৬ ঘণ্টা সময় না খেয়ে থাকতে পারেন এবং এর সঙ্গে সিগারেট, জর্দা, পান কোনো কিছুই না খেয়ে থাকতে পারেন; তারা কেন জীবনের বাকি সময়ের জন্য ধূমপান বা তামাক ছাড়তে পারবেন না? এটা তো সম্পূর্ণভাবে একজন মানুষের ইচ্ছার ওপর নির্ভর করে।
পবিত্র এই রমজান মাস থেকেই শুরু হোক সব ধরনের তামাক বর্জন। এ ক্ষেত্রে সহায়তার জন্য একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শও নেওয়া যেতে পারে।
করণীয়
* আপনি যদি ধূমপান না করেন তবে আপনার সন্তানও ধূমপান করবে না, কারণ শিশুরা যা দেখে তা-ই শেখে।
* বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, পরোক্ষ ধূমপান অধূমপায়ীদের হৃদরোগের ঝুঁকি ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ বাড়িয়ে দেয়। ফুসফুস ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায় শতকরা ২০ থেকে ৩০ ভাগ। শিশুদের ‘সাডেন ইনফ্যান্ট ডেথ সিনড্রোম’ রোগেরও কারণ পরোক্ষ ধূমপান। মানুষ জেনে-বুঝে যেমন নিজের ক্ষতি করতে পারে না, তেমনি অন্যের ক্ষতি করাও সম্পূর্ণ অনুচিত।
* যারা ধূমপান করে, তাদেরই শুধু বিপদের আশঙ্কা থাকে তাই নয়, তাদের আশপাশে যারা থাকে তাদেরও বক্ষব্যাধি ইত্যাদিতে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। আপনি যদি ধূমপান ছাড়তে পারেন, তবে আপনার পরিবার ও বন্ধুবান্ধবরাও বিভিন্নভাবে উপকৃত হবে।
* ধূমপান ছাড়তে প্রবল ইচ্ছাশক্তির প্রয়োজন। কাজটি কয়েকটি পর্যায়ে করা যায়। প্রথমে আপনি চিন্তা করে নিন কেন আপনি ধূমপান ছাড়বেন। মনে মনে আপনি শক্ত যুক্তি খুঁজে নিতে চেষ্টা করুন।
* আপনি নিজের মনকে ওই যুক্তিগুলোর আলোকে ধূমপান ছাড়ার জন্য প্রস্তুত করতে থাকুন।
* সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আপনি এক বিশেষ দিনে কাজটি সম্পন্ন করুন। সেদিন অবশ্যই ধূমপান ছেড়ে দিন।
* আপনার ধূমপানের নেশার তাগিদ উঠলে অন্য কোনো কাজে বা চিন্তায় নিজেকে ব্যস্ত রাখুন।
* রমজানে ইফতারের পর ধূমপানের ইচ্ছা প্রবল হয়। এ সময়ে চিন্তাশীল ও অন্যান্য কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ুন।