সারাদেশে অপরাধ বাড়ছে। জেলা-উপজেলা ও গ্রামাঞ্চলে খুন, চুরি, ডাকাতি বৃদ্ধির অন্যতম কারণ মাদক। গ্রামের বেকার যুব সমাজ মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছে। মাদকের এলাকার ভাগাভাগি নিয়ে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে অপরাধ কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে। আবার মাদক সেবনকারীরা অর্থ জোগাড় করতে গিয়ে খুনসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়াচ্ছে। প্রতিদিনই এই ধরনের খুন, ডাকাতি ও চুরির ঘটনার খবর আমাদের স্থানীয় প্রতিনিধিরা পাঠাচ্ছেন। হঠাৎ অর্থ-বিত্তের মালিক হতে দলীয় এক শ্রেণির নেতাকর্মীরা এখন মাদক ব্যবসা বেছে নিয়েছেন। এক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ-বিএনপি সবাই ঐক্যবদ্ধ। এদিকে থানাগুলোর কার্যক্রম নিয়মিত মনিটরিং হয় না। এই সুযোগে থানার এক শ্রেণির পুলিশও নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়েছে।
পুলিশ হেডকোয়ার্টারের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত সারা দেশে ৭০৯ জন খুন হয়েছেন। এই সময়ে ৭৮টি ডাকাতি ও ২ হাজার ৩০৬টি চুরির ঘটনা ঘটেছে। ২০২২ সালে ৩ হাজার ১২৬ জন খুন, ৪০৬টি ডাকাতি ও ৯ হাজার ৫৯১টি চুরির ঘটনা ঘটেছে। তবে ঘটনার তিন ভাগের এক ভাগও থানায় রেকর্ড হয় না। কারণ পুলিশের কাছে অভিযোগ দিতে গিয়ে মানুষ চরম হয়রানির শিকার হয়। প্রতিকারের চেয়ে হয়রানি বেশি হয়। এ কারণে ডাকাতি ও চুরির বেশির ভাগ ঘটনা নিয়ে মানুষ থানা পুলিশের কাছে যেতে চান না। আমাদের স্থানীয় প্রতিনিধিরা বলেন, ভূমি বিরোধের ক্ষেত্রে অধিকাংশ সময় পুলিশ মীমাংসা করে দেন। অনেকের জমি দখলও করে দেন। বর্তমানে অনেক যুবক বেকার। করোনার কারণে বেকার হয়ে শহর ছেড়ে গ্রামেও গেছেন অনেকে। তাদের অনেকেই শুরু করে দিয়েছেন মাদক ব্যবসা। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে কোনো কোনো চেয়ারম্যান ও মেম্বার এলাকা ভাগ করে মাদক ব্যবসা করে যাচ্ছেন। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের সময় এসব মাদক ব্যবসায়ী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। একজন মেম্বারও কোটি টাকা খরচ করেন নির্বাচনে। চেয়ারম্যান ব্যয় করেন কয়েক কোটি টাকা। অনেক ক্ষেত্রে দলীয়ভাবে এদের নামই কেন্দ্রে পাঠানো হয়।