প্রচলিত সরকার ব্যবস্থাগুলোর মধ্যে গণতন্ত্রই সবচেয়ে ভালো। এমনকি এটাও বলা হয়, সবচেয়ে খারাপ গণতন্ত্রও অন্য যে কোনো ব্যবস্থার চেয়ে ভালো। আর গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ভালো সংসদীয় ব্যবস্থা। সংসদীয় ব্যবস্থায় জনগণের কাছে সরকার সম্মিলিতভাবে দায়বদ্ধ থাকে। ব্যক্তি নয়, সংসদীয় ব্যবস্থায় সমষ্টি গুরুত্বপূর্ণ। এমনকি সংসদীয় ব্যবস্থায় বিরোধী দলও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। সংসদীয় গণতন্ত্র একটি দুই চাকার সাইকেলের মত। সরকারি ও বিরোধী দল মিলেই সচল থাকে সংসদ। একটি চাকা অচল হলে সংসদীয় গণতন্ত্রও খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলে। কখনো কখনো সংসদও অচল হয়ে যায়। বাংলাদেশ সংসদীয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় চলে। আমরা এখনও আদর্শ সংসদীয় ব্যবস্থায় পৌঁছাতে পারিনি। কিন্তু বাংলাদেশে সংসদীয় ব্যবস্থার একটা ধারাবাহিকতা চলছে। ভালো-মন্দ, চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে একদিন নিশ্চয়ই আমরা গণতান্ত্রিক উৎকর্ষে পৌঁছাতে পারবো।
বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ একটি মাইলফলক স্পর্শ করেছে গত ৭ এপ্রিল। ১৯৭৩ সালের ৭ এপ্রিল বসেছিল বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন। সে হিসেবে জাতীয় সংসদ তার সুবর্ণ জয়ন্তী পালন করছে। ১৯৭৩ সালের ৭ মার্চ অনুষ্ঠিত প্রথম নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত হয়েছিল প্রথম সংসদ। আজকের যে সুরম্য সংসদ ভবন, তখন সেটি নির্মাণাধীন ছিল। প্রথম অধিবেশন বসেছিল তেজগাঁওয়ে, আজ যেখানে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, তখন সেখানেই বসতো সংসদের অধিবেশন। অবশ্য প্রথম সংসদ গঠনের আগেই বাংলাদেশ পেয়েছিল একটি চমৎকার সংবিধান। অবশ্য সেটাও এসেছিল জনগণের রায়ের ভিত্তিকেই। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচিত সদস্যদের নিয়ে ১৯৭২ সালের ১০ এপ্রিল বসেছিল গণপরিষদ।