রুচির কুতর্ক ছেড়ে হিরো আলমদের সাবকালচারকে চিনতে শিখুন

প্রথম আলো হেলাল মহিউদ্দীন প্রকাশিত: ০২ এপ্রিল ২০২৩, ১৮:০৩

‘উপসংস্কৃতি’ বা ‘সাবকালচার’ শুধু বাংলাদেশেই জন্মাচ্ছে না, দুনিয়াজুড়েই খই-মুড়ি-মুড়কির মতো জন্মাচ্ছে। বাংলাদেশে জন্মাচ্ছে ওয়াজ সাবকালচার, মোটিভেশনাল স্পিচ সাবকালচার, বিসিএস সাবকালচার, রাঁধারাঁধি-ঘোরাঘুরি সাবকালচার, টিকটকার সাবকালচার, দালাল সাবকালচার, ব্যাংক লুট ও টাকা পাচার সাবকালচার, গ্যাং সাবকালচার এবং আরও নানা সাবকালচার। এগুলোর মধ্যে তর্ক-কুতর্কে চলে এসেছে হিরো আলম সাবকালচার। এ প্রসঙ্গে বলা দরকার, সমাজবিজ্ঞান ও নৃবিজ্ঞানে ‘সাবকালচার’ বা ‘উপসংস্কৃতি’ সমাজ পরিবর্তনের ব্যাখ্যায় খুবই কার্যকর একটি ধারণা।


তাত্ত্বিক আলোচনায় না গিয়ে সাধারণ পাঠকের জন্য সহজবোধ্য একটি ধারণা দেওয়া যাক। ‘উপ’ উপসর্গটি দিয়েই বোঝা যায় ‘উপসংস্কৃতি’ মূলধারার সংস্কৃতি নয়, তবে উপজাত। যেমন অপরিশোধিত পেট্রল পরিশোধনের সময় প্লাস্টিক, রং, নাইলন ইত্যাদি তৈরি হয়। যেমন গ্যাং সাবকালচার বা আন্ডারগ্রাউন্ড সাবকালচার তৈরি হয় দুর্নীতির সংস্কৃতির উপজাত হিসেবে। ড্রাগ সাবকালচার তৈরি হয় আইন ও শৃঙ্খলা সংস্কৃতির অধঃপতনের উপজাত হিসেবে।


উপসংস্কৃতির গ্যাং ও ড্রাগ উদাহরণ দুটি টানার কারণে ‘উপসংস্কৃতি’ মানেই খারাপ কিছু মনে করার কোনোই কারণ নেই। অসংখ্য নির্দোষ ও স্বাভাবিক উপসংস্কৃতিও জন্ম নিতে পারে। মাঝেমধ্যেই সমাজে বিনির্মাণ (ডিকনস্ট্রাকশন) জরুরি হয়ে পড়ে। সমাজের অনেক মানুষ যখন কোনো কিছুকে বড়সড় ধাক্কা দিতে চান, ভাঙন চান, চ্যালেঞ্জ চান, সমাজবদল দরকার মনে করেন, রাগ-ক্ষোভ-বঞ্চনার চাপা যন্ত্রণা উগরে দেওয়ার উপায় খোঁজেন, তখন অপ্রথাগত ও উল্টো স্রোতে চলার মধ্যেই উপায় খোঁজে। পাশ্চাত্যে হিপ্পি, পাংক সাবকালচার জন্ম নিয়েছিল সোভিয়েত-মার্কিন শীতল যুদ্ধ, ভিয়েতনাম যুদ্ধ, সামাজিক কল্যাণ কর্মসূচিতে কাটছাঁট, করপোরেশনের একাধিপত্য, পুঁজির দাপট, মানুষে-মানুষে বৈষম্য বাড়া ইত্যাদির প্রতি তীব্র ঘৃণা হিসেবে।


সাব কালচারগুলোর বৈশিষ্ট্যগুলোই ছিল দৃষ্টিকটু রকমের দৃষ্টিকাড়া উদ্ভট পোশাক-আশাক। শুধু প্রাচ্যের মধ্যবিত্তরাই হিপ্পি বা পাংকদের সাবকালচারকে রুচিহীন ও বিসদৃশ মনে করত না; বরং খোদ পাশ্চাত্যের মধ্যবিত্তের এলিট অংশও রুচির প্রশ্ন তুলেছিল। অনেক পরে অবশ্য প্রায় সবাই উপসংস্কৃতিগুলোর মর্মার্থ ধরতে পেরেছিল।


সাবকালচারগুলোর আয়ু সাধারণত কম। মজা ফুরিয়ে গেলেই শেষ। যেমন হিপি সাবকালচার, পাংক সাবকালচার বা বেল বটম সাবকালচার টেকেনি। ভিয়েতনাম যুদ্ধের সমাপ্তি, বিশ্বায়ন, বৈচিত্র্য ও অংশগ্রহণমূলক কাজে বিদ্বেষ-বর্ণবাদ কমে আসায় সেগুলোর প্রয়োজন থাকেনি। ‘হিরো আলম সাবকালচার’ও হয়তো টিকবে না। তবে আমরা টিকিয়ে রাখলে টিকবে। আমাদের কুতর্ক-কুভাবনার কারণে টিকেও যেতে পারে।






সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us