দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের মুখোমুখি সাকিব আল হাসানের দল।
সিরিজ জিতল বাংলাদেশ
জফ্রা আর্চারের দারুণ বোলিংয়ে শেষটা জমে ওঠেছিল ম্যাচ। শঙ্কায় পড়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ। তবে নাজমুল হোসেন শান্ত ছিলেন বলে ম্যাচ হেলে ছিল স্বাগতিকদের দিকেই।
জয়ের জন্য শেষ দুই ওভারে প্রয়োজন ছিল ১৩ রান। শান্ত ও তাসকিন আহমেদের তিন চারে ৭ বল বাকি থাকতেই সমীকরণ মিলিয়ে ফেলল বাংলাদেশ।
৪ উইকেটের জয়
টেস্ট খেলুড়ে দেশগুলোর মধ্যে কেবল ইংল্যান্ডের বিপক্ষেই ছিল না কোনো সিরিজ জয়। সেই আক্ষেপ কাটল এবার। প্রথম দুই ম্যাচ জিতে টি-টোয়েন্টি সিরিজ নিশ্চিত করল সাকিব আল হাসানের দল।
ইংল্যান্ডের ১১৭ রান ৭ বল বাকি থাকতে পেরিয়ে গেল বাংলাদেশ। ১২ রানে ৪ উইকেট নেওয়ার পর ২০ রানের আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে এতে বড় অবদান মেহেদী হাসান মিরাজের। ফিল্ডিংয়ে আরেকটি দারুণ দিন কাটানোর পর তিন চারে ৪৭ বলে ৪৬ রানের ইনিংসে দলের জয় নিয়ে ফেরা নাজমুল হোসেন শান্তর অবদানও কম নয়।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ইংল্যান্ড: ২০ ওভারে ১১৭ (সল্ট ২৫, মালান ৫, মইন ১৫, বাটলার ৪, ডাকেট ২৮, কারান ১২, ওকস ০, জর্ডান ৩, রেহান ১১, রশিদ ১*, আর্চার ০; তাসকিন ৪-০-২৭-১, মুস্তাফিজ ৪-০-১৯-১, নাসুম ১-০-১৩-০, সাকিব ৩-০-১৩-১, হাসান ২-০-১০-১, মিরাজ ৪-০-১২-৪, শান্ত ১-০-৯-০, আফিফ ১-০-৭-০)
বাংলাদেশ: ১৮.৫ ওভারে ১২০/৬ (লিটন ৯, রনি ৯, শান্ত ৪৬*, হৃদয় ১৭, মিরাজ ২০, সাকিব ০, আফিফ ২, তাসকিন ৮*; কারান ৩-০-১৫-১, ওকস ১-০-৭-০, আর্চার ৪-০-১৩-৩, মইন ৪-০-২৪-১, রশিদ ৪-০-২৮-০, রেহান ২-০-১১-১, জর্ডান ০.৫-০-১৫-০)
ফল: বাংলাদেশ ৪ উইকেটে জয়ী
হৃদয়কে ফেরালেন রেহান
অভিষেকে নিজের দ্বিতীয় বলেই্ উইকেট পেলেন রেহান আহমেদ। আপাত সাটামাটা এক ডেলিভারিতে ক্যাচ দিলেন তৌহিদ হৃদয়। ভাঙল ৩১ বল স্থায়ী ২৯ রানের জুটি।
লেগ স্পিনারে শর্ট, অফ স্টাম্পের বেশ বাইরের বলে পয়েন্টে ক্যাচ তুলে দেন হৃদয়। ১৮ বলে দুই চারে তিনি করেন ১৭।
১১ ওভারে বাংলাদেশের রান ৩ উইকেটে ৬০। ক্রিজে নাজমুল হোসেন শান্তর সঙ্গী মেহেদী হাসান মিরাজ। ফেরার ম্যাচে বল হাতে আলো ছড়ানোর পর এবার ব্যাটিংয়ে অবদান রাখার সুযোগ তার সামনে। প্রমোশন পেয়ে নেমেছেন পাঁচে।
মাঝপথে কক্ষপথেই বাংলাদেশ
পাওয়ার প্লেতে ২ ওপেনার লিটন দাস ও রনি তালুকদারকে হারানো বাংলাদেশ কক্ষপথে আছে নাজমুল হোসেন শান্ত ও তৌহিদ হৃদয়ের দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে।
১০ ওভারে বাংলাদেশের রান ২ উইকেটে ৫৫। জয়ের জন্য শেষ ১০ ওভারে আরও ৬৩ রান চাই তাদের।
২০ বলে এক চারে ১৭ রানে ব্যাট করছেন শান্ত। ১২ বলে দুই চারে হৃদয়ের রান ১৭। এর মধ্যে দুই জনে উপহার দিয়েছেন ২৯ বলে ২৮ রানের জুটি।
টিকলেন না রনি
পাওয়ার প্লের মধ্যে দুই ওপেনারকে হারাল বাংলাদেশ। লিটন দাসের মতো রনির তালুকদারও ফিরে গেলেন তুলে মারতে গিয়ে।
জফ্রা আর্চারকে মিড অনের উপর দিয়ে ওড়াতে চেয়েছিলেন ডানহাতি ওপেনার। টাইমিং করতে পারেননি, পিছিয়ে গিয়ে সহজ ক্যাচ নেন মইন আলি।
১৪ বলে এক চারে ৯ রান করেন রনি।
৬ ওভারে বাংলাদেশের রান ২ উইকেটে ৩২। ক্রিজে নাজমুল হোসেন শান্তর সঙ্গী তৌহিদ হৃদয়।
সংক্ষিপ্ত স্কোর: ইংল্যান্ড ২০ ওভারে ১১৭
ইংল্যান্ড: ২০ ওভারে ১১৭ (সল্ট ২৫, মালান ৫, মইন ১৫, বাটলার ৪, ডাকেট ২৮, কারান ১২, ওকস ০, জর্ডান ৩, রেহান ১১, রশিদ ১*, আর্চার ০; তাসকিন ৪-০-২৭-১, মুস্তাফিজ ৪-০-১৯-১, নাসুম ১-০-১৩-০, সাকিব ৩-০-১৩-১, হাসান ২-০-১০-১, মিরাজ ৪-০-১২-৪, শান্ত ১-০-৯-০, আফিফ ১-০-৭-০)
২০ ওভার ব্যাট করে ইংল্যান্ডের সর্বনিম্ন
১৩ ম্যাচ পর অলআউট হলো টি-টোয়েন্টির বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড। প্রথম ইনিংসের বিবেচনায় ২৭ ম্যাচ পর।
শেষ বলে ১১৭ রানে থামে জস বাটলারের দল। ২০ ওভার ব্যাটিং করে ইংল্যান্ডের সর্বনিম্ন এটাই। ২০১২ সালের সেপ্টেম্বরে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৭ উইকেটে ১১৮ ছিল আগের সর্বনিম্ন।
সফরকারীদের এতো কম রানে গুটিয়ে দেওয়ায় সবচেয়ে বড় অবদান মেহেদী হাসান মিরাজের। ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে মাত্র ১২ রানে ৪ উইকেট নেন দলে ফেরা এই অফ স্পিনিং অলরাউন্ডার।
১১৭ রানে থামল ইংল্যান্ড
অনেকটা সময় ক্রিজে থাকলেও প্রত্যাশিত ঝড় তুলতে পারেননি বেন ডাকেট। শেষ ওভারে মুস্তাফিজুর রহমানকে ছক্কার বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান ফিরে যান ক্যাচ দিয়ে। মিড অন থেকে অনেকটা দৌড়ে এসে দারুণ ক্যাচ নেন নাজমুল হোসেন শান্ত।
২৮ বলে দুই চারে ডাকেট করেন ২৮ রান।
ওয়াইড বলে রান নেওয়ার চেষ্টায় রান আউট হয়ে যান রেহান আহমেদ। ১১ বলে দুই চারে ১১ রান করেন তিনি।
শেষ বলে দ্রুত ১ রানের চেষ্টায় রান আউট হয়ে যান জফ্রা আর্চার। শেষ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে ১১৭ রানে গুটিয়ে যায় ইংল্যান্ডের ইনিংস।
ফেরার ম্যাচে মিরাজের ৪
আগের ১৯ ম্যাচে মেহেদী হাসান মিরাজ নিয়েছিলেন ৮ উইকেট। সেরা ছিল ১৭ রানে ৩ উইকেট। সেটা ছাড়িয়ে ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো চার উইকেটের স্বাদ পেলেন এই অফ স্পিনিং অলরাউন্ডার।
দলে ফেরার ম্যাচে নিজের শেষ বলে ক্রিস জর্ডানকে ফেরান মিরাজ। ছক্কার চেষ্টায় ডিপ মিডউইকেটে রনি তালুকদারের হাতে ধরা পড়েন ইংলিশ অলরাউন্ডার। ১০ বলে তিনি করেন ৩।
৪ ওভারে ১২ রান দিয়ে মিরাজ নেন ৪ উইকেট।
১৭ ওভারে ইংল্যান্ডের রান ৭ উইকেটে ১০০। ক্রিজে বেন ডাকেটের সঙ্গী অভিষিক্ত রেহান আহমেদ।