রাজধানীর সিদ্দিকবাজারে ভবনে ভয়াবহ বিস্ফোরণের দগ্ধ ও ক্ষতবিক্ষত আট জন শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন। তাঁদের মধ্যে দুজন লাইফ সাপোর্টে এবং একজন সাধারণ আইসিইউতে রয়েছেন। এ তিনজনই সংকটাপন্ন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।
আজ শুক্রবার দুপুরে শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আইসিইউয়ের সামনে সাদা বোর্ডে এসব তথ্য দেখা গেল। পাশেই সিঁড়িতে বসে কথা হয় লাইফ সাপোর্টে থাকা খলিলুর রহমান হাসানের ছোট ভাই রাতুল ইসলাম রায়হানের সঙ্গে। তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘ভাইয়ের অবস্থা ভালো না। প্রাণ যায় যায় অবস্থা। লাইফ সাপোর্টে রাখছে। জানি না, কহন কী হয়!’
হাসান কুইন টাওয়ারের সামনের ফুটপাতে ব্যাগের ব্যবসা করতেন। এ ভবনেই বিস্ফোরণে এখন পর্যন্ত ২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনার দিনও সেখানেই ছিলেন হাসান। বিস্ফোরণে উড়ে আসা তিনটি কাচের টুকরা তাঁর গলার তিন জায়গায় বিঁধে যায়। আগুনে ঝলসে যায় মুখ। এ অবস্থায় সেখান থেকে রিকশায় করে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হয়। ঢামেক থেকে পাঠানো হয় বার্ন ইনস্টিটিউটে। তাঁর গলায় গুরুতর জখম আর মুখ ও শরীরের ১২ শতাংশ দগ্ধ। তিন দিন ধরে লাইফ সাপোর্টে ৩৫ বছরের এই ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। সুমনের গ্রামের বাড়ি নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে। ঢাকায় সিদ্দিকবাজারের একটি মেসে ভাড়া থাকতেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় অবস্থার অবনতি হলে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয় আজম মৃধাকে। শরীরের ৮০ শতাংশ পুড়ে যাওয়া আজম কাজ করতেন ভবনটির বাংলাদেশ স্যানিটারি নামে একটি দোকানে। তাঁর বাড়ি রাজধানীর মগবাজারের মধুবাগে। একান্নবর্তী পরিবারে বড় হয়েছেন। কয়েক বছর আগে বিয়ে করেছেন, ছোট্ট একটা কন্যা রয়েছে।
নিম্ন আয়ের পরিবারে অর্থ সংস্থানের বড় অংশ বহন করতেন আজম। এখন আয়–ব্যয়ের হিসাবের ঊর্ধ্বে। আজমের প্রতিদিন কয়েক ব্যাগ প্লাটিলেট দরকার হচ্ছে। ওষুধপথ্যের খরচ জোগাতেই হিমশিম পরিবার। চার তলার আইসিইউয়ের সামনে দাঁড়িয়ে কথা হয় আজমের চাচাতো ভাই শাকিল মৃধা ও অন্য স্বজনদের সঙ্গে। তাঁরা বলেন, অবস্থা খুব খারাপ! শেষ চেষ্টা হিসেবে গতকাল লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়েছে। এখন বাকিটা আল্লাহর হাতে। আমরা দোয়া আর চেষ্টা ছাড়া তো কিছু করতে পারব না!