সাম্প্রতিক কয়েকটি দুর্ঘটনায় প্রাণহানির প্রেক্ষাপটে রাসায়নিক ও গ্যাস বিস্ফোরণ রোধ করতে আন্তর্জাতিক স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং সিস্টেম অনুসরণসহ শিল্প কারখানা তদারকিতে জাতীয় সমন্বয় কমিটি গঠনের প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ রসায়ন সমিতি।
মঙ্গলবার চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে সমিতির চট্টগ্রাম অঞ্চলের এক মতবিনিময় সভা থেকে এসব দাবিসহ ১৪টি সুপারিশ করা হয়।
সম্প্রতি সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্ট ও সিদ্দিক বাজারে বিস্ফোরণের পরিপ্রেক্ষিতে শিল্প প্রতিষ্ঠানে প্রাকৃতিক গ্যাস ও রাসায়নিক ব্যবহারে এবং আবাসিক ভবন ব্যবস্থাপনায় জনসচেতনা বাড়াতে এসব সুপারিশ দেওয়া হয়েছে বলে সমিতির নেতারা জানান।
গত ৪ মার্চ সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ি ইউনিয়নে সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টে বিস্ফোরণে সাতজন সাতজন নিহত হয়। এর একদিনের মাথায় ঢাকায় মিরপুর রোডের একটি ভবনে বিস্ফোরণে তিনজন, এরও একদিন পর ঢাকার সিদ্দিক বাজারে আরেক ভয়াবহ বিস্ফোরণে এ পর্যন্ত ২৫ জনের মৃত্যু হয়।
এসব দুর্ঘটনার তদন্তে ‘অনেক কমিটি’ করায় সমন্বয়হীনতা তৈরি হয় বলেও মনে করেন সমিতির সদস্যরা।
সমিতির চট্টগ্রাম অঞ্চলের সভাপতি জাফর আলম বলেন, “দুর্ঘটনার পরে মনিটরিং করার চেয়ে আগে করাটা জরুরি। সঠিক তদারকির অভাবেই দুর্ঘটনা ঘটে। কারখানাগুলোতে দক্ষ জনবলের সঙ্কট আছে। ঘটে যাওয়া বিভিন্ন দুর্ঘটনা সচেতনতা ও মানসম্মত ব্যবস্থাপনা সিস্টেমের অভাবে ঘটেছে।
“আর সরকারি যেসব সংস্থা তদারক করবে তাদেরও জনবল বাড়ানো উচিত। তাহলে তারা যথাযথভাবে কাজ করার চেষ্টা করবে। নিমতলি বা বিএম ডিপোর ঘটনার পর আমরা দেখলাম ৭-৮টা করে তদন্ত কমিটি হয়। যা প্রমাণ করে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সমন্বয়ের অভাব আছে।”
তিনি বলেন, “আমরা প্রস্তাব করছি ন্যাশনাল কো-অর্ডিনেশন কমিটি করার। যারা আন্তর্জাতিক ও দেশীয় আইনকে গাইডলাইন হিসেবে ধরে কাজ করবে। এই কমিটি ক্যাবিনেট ডিভিশনের অধীনে সরাসরি কাজ করতে পারে। তাহলে এরকম বিচ্ছিন্ন তদন্ত ও ব্যবস্থা গ্রহণ না হয়ে সমন্বিতভাবে হবে।
“যখনই কোনো দুর্ঘটনা হয়, আমরা জানতে চাই দায়ী কে? একজনকে দায়ী করার জন্যই যেন তদন্ত করি। কিন্তু যদি পদ্ধতি অনুসরণ করা হত তাহলে দুর্ঘটনাই ঘটত না। পদ্ধতি চালু থাকলে জানা যেত কোথায় ঘাটতির কারণে দুর্ঘটনা ঘটেছে।”