দেশে ভাস্কুলার ডিজিজ বা রক্তনালি রোগের চিকিৎসা খুবই অপ্রতুল। ১৭ কোটি মানুষের বিপরীতে সরকারি-বেসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত চারটি হাসপাতালে ১৩৮টি শয্যা রয়েছে। রোগটির চিকিৎসায় কর্মরত আছেন প্রায় অর্ধশত চিকিৎসক। এর মধ্যে সরকারি হাসপাতালে একজন এবং বেসরকারিতে তিনজন অধ্যাপক আছেন। সব হাসপাতালে ভাস্কুলার সার্জারি বিভাগ, প্রয়োজনীয় সংখ্যক চিকিৎসক ও শয্যা না থাকায় রোগীরা ভোগান্তিতে পড়ছেন। এমন পরিস্থিতিতে সংশ্লিষ্টরা বলছেন চিকিৎসাসেবাটি দ্রুত সহজলভ্য করা না গেলে ভবিষ্যতে হাত-পা হারানো মানুষের সংখ্যা অনেক বেড়ে যাবে।
বিশেষজ্ঞদের অভিমত-সাধারণত একজন মানুষের শরীরে ধমনি ও শিরা নামে দুই ধরনের রক্তনালি থাকে। ধমনির কাজ হার্টে একধরনের পাম্প বা চাপ প্রয়োগ করে দেহের অঙ্গপ্রত্যঙ্গে বিশুদ্ধ রক্ত সরবরাহ করা। অন্যদিকে শিরা দেহের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গে উৎপন্ন দূষিত রক্ত হার্টে জমা করে। কোনো রোগের কারণে শিরা বা ধমনির স্বাভাবিক কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হলে চিকিৎসাশাস্ত্রের পরিভাষায় একে ভাস্কুলার ডিজিজেস বা রক্তনালির রোগ বলে।
১রোগটি কেন হয় জানতে চাইলে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের ভাস্কুলার সার্জারির বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. মো. ফিদাহ্ হোসেন যুগান্তরকে বলেন, রক্তনালি রোগের কারণ নির্দিষ্টভাবে বলা কঠিন। সাধারণত শরীরের রক্ত জমাট বেঁধে ব্লক হতে পারে। এক্ষত্রে হাত-পা ছাড়াও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় টিউমার, ভেরিকস ভেইন, আলসার, গ্যাংগ্রিনসহ নানা কারণে রক্তনালি ব্লক হতে পারে। এর বাইরেও কিছু রিস্ক ফ্যাক্টর রয়েছে, যেগুলো এ রোগের জন্য অন্যতম দায়ী। এগুলো হচ্ছে-ধূমপান, মদ্যপান, তামাক বা জর্দা সেবন। এছাড়া ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপ, জন্মগত বা জিনগত সমস্যা, জীবাণু সংক্রমণ (কোভিড-১৯), চর্বিজাতীয় খাদ্য গ্রহণ ও আঘাতজনিত কারণেই এ রোগ হয়। আঘাতের ফলে ধমনি অথবা শিরার রক্তনালি ক্ষতিগ্রস্ত হলে জরুরি ভিত্তিতে অস্ত্রোপচার করতে হয়।