“এই দেখেন আমার চোখের অবস্থা, একদম লাল হয়ে থাকে, চোখ মলিন হয়ে যায়। যে কেউ দেখলে জিজ্ঞেস করে, ‘ঘুম থেকে উঠে চোখেমুখে পানি দেন নাই’। শীত না শুধু, একটু রোদ উঠলেই ধুলার কারণে এই অবস্থা হয়। সাথে শ্বাসকষ্ট, এলার্জির সমস্যা তো আছেই”- রাজধানীতে রাইড শেয়ারে মোটরসাইকেল চালানোর নিত্যদিনের ভোগান্তির কথা বলছিলেন নাসিরউদ্দিন মোল্লা।
রোববার ঢাকার আগারগাঁওয়ে যাত্রীর জন্য অপেক্ষমান এই বাইকার সানগ্লাস খুলে চোখ দেখাতে লাগলেন। নাকমুখ রুমালে ঢাকা এই চালক আক্ষেপ করে বললেন, “একটা দিনও ভালো কোনো কাপড় পরে বের হওয়ার সুযোগ নাই।”
ঢাকার আজিমপুর এলাকার রিকশাচালক আফসার মিয়ারও একই অবস্থা। তিনি বললেন, “১০ বছর ধইরা রিকশা চালাই, এই অবস্থাই দেখি। শ্বাস নেওয়া যায় না, চোখ জ্বলে, শরীর চুলকায়।”
ধুলাবালির কারণে এই ভোগান্তির সমাধান তিনি ছেড়ে দিয়েছেন ‘সৃষ্টিকর্তার হাতে’। বললেন, “রাস্তাঘাটে খাইটা খাওয়া মানুষের এইসব দেখার সময় নাই। গরিবরে আল্লায় বাঁচায়।”
শীতের কুয়াশায় জবুথবু ঢাকায় সূর্যের দেখা মিলতেই বাতাসের ক্ষতিটা এ দিন টের পাওয়া গেল। শীতের আমেজের মধ্যে রাজধানীর বাতাসে ভারী ধুলিকণার পরিমাণ বাড়তে বাড়তে আবারও তা শীর্ষে পৌঁছেছে। দূষিত বায়ুর শহরের তালিকায় ফের শীর্ষে উঠে এসেছে ঢাকা।
রোববার সকালে সুইস বায়ুমান পর্যবেক্ষক সংস্থা আইকিউএয়ারের শহরভিত্তিক এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্সে (একিউআই) সবচেয়ে বাজে দশা ছিল ঢাকার বাতাসের, স্কোর ছিল ২৭১, যার মানে ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর ও ঝুঁকিপূর্ণ’।
এর আগে গত অক্টোবরে ঢাকার বাতাসে কিছুটা স্বস্তিতে শ্বাস নিতে পেরেছিল নগরবাসী। অক্টোবরের বাতাসে ধুলোর পরিমাণ বাড়লেও দ্বিতীয় সপ্তাহের শুরুতে কয়েক দিনের ছুটি আর বৃষ্টি ঢাকার আশেপাশের এলাকায় বায়ুমানের উন্নতিতে ভূমিকা রেখেছিল।