বিশ্ব পরিবেশ ও জ্বালানি-সংকটে সমূহ দুর্যোগ থেকে রক্ষা পাওয়ার একমাত্র উপায় নবায়নযোগ্য উৎস। পৃথিবীর প্রতিটি দেশ এখন সেদিকেই ঝুঁকছে। বাংলাদেশও অন্তত ১০ শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদনে এ পরিকল্পনা করেছিল, কিন্তু প্রভাবশালী তেল-গ্যাস লবির দৌরাত্ম্যে সে ক্ষেত্রে সাফল্য এসেছে সামান্যই। তবে ছোট একটা দেশে অকৃষিজমি খুঁজে পাওয়াও সহজ নয়। ১ মেগাওয়াট সোলার ফার্ম স্থাপনে ৩ একর জমির প্রয়োজন হয়। তা ছাড়া মরুভূমির অনেক দেশে সারা দিনে গড়ে ৬ ঘণ্টা পর্যন্ত সূর্যের আলো পাওয়া যায়, বাংলাদেশে যা মাত্র ৪ ঘণ্টা। তবে সোলার প্যানেলের দক্ষতা দিন দিন বাড়ছে, দামও কমছে পাল্লা দিয়ে। প্রচলিত সেন্ট্রাল ইনভার্টারের পরিবর্তে ডিস্ট্রিবিউটেড প্রযুক্তির ‘স্ট্রিং ইনভার্টার’ সৌর প্রকল্পের ডাউন টাইম ব্যাপকভাবে কমিয়ে এনেছে।
বাংলাদেশে বর্তমানে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তিতে পাওয়া গ্যাস দিয়ে কম্বাইন্ড সাইকেল পদ্ধতিতে উৎপাদিত বিদ্যুতের প্রতি কিলোওয়াট-ঘণ্টার খরচ ক্যাপাসিটি চার্জসহ ১৪-২২ টাকা পড়ে, যেখানে জ্বালানি খরচ ১২ টাকা। চুক্তি অনুযায়ী পাওয়ার প্ল্যান্টটি ২০ ঘণ্টা চালালে ক্যাপাসিটি চার্জ আসে ২ টাকা, তবে কেবল ৪ ঘণ্টা চললে তা ১০ টাকায় পৌঁছায়।
যত ঘণ্টাই চলুক না কেন প্রতিদিন প্রতি ইউনিট ৪০ টাকা হারে ক্যাপাসিটি চার্জ দিতেই হবে। অন্যদিকে এখনকার বাজারদরে ‘স্পট মার্কেট’ থেকে গ্যাস কিনলে, চালানো ভেদে প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ ২৪ টাকা গ্যাসের দামসহ ২৬-৩৪ টাকা পড়বে। ৪ ঘণ্টা থেকে ২০ ঘণ্টা চলা ফার্নেস অয়েলভিত্তিক প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের ব্যয় ১৩ টাকার তেলসহ ১৫-২৩ টাকা দাঁড়াচ্ছে। নোংরা কয়লা বিদ্যুতের মূল্যও ১৫ টাকার কম নয়।
ফসিল ফুয়েল ব্যবহারের বিপরীতে ‘কপ-২৭’ জলবায়ু সম্মেলনে ঘোষিত ‘কার্বন সারচার্জ’ হিসেবে নিলে এ খরচ আরও অন্তত ১০-২০ শতাংশ বাড়বে।