খাদ্যাভ্যাসই ব্যক্তির পরিচয়– এই বক্তব্য কতটা সত্য? একজন সাধারণ মানুষের জন্য এই বক্তব্য সত্য হোক বা না হোক, একজন ক্রীড়াবিদের জন্য এর তাৎপর্য অনেক বেশি। অনেকেরই জানার আগ্রহ থাকে তার প্রিয় খেলোয়াড় কী খায়।
চলছে বিশ্বকাপ ফুটবল। ফুটবলপ্রেমী কোটি কোটি দর্শকের চোখ তার প্রিয় দল আর খেলোয়াড়ের দিকে। অনেকের আগ্রহ খেলোয়াড়দের জীবনযাপন ও খাদ্যাভ্যাস নিয়ে।
আজকের লেখায় আমরা জানবো জনপ্রিয় ৪ ফুটবলারের খাদ্যাভ্যাস নিয়ে।
লিওনেল মেসি, আর্জেন্টিনা
বিশ্বাস করুন বা না করুন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ খেলোয়াড় মেসির একটা সময় অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস ছিল। কোমল পানীয় ও ফাস্টফুড ছিল তার প্রিয় খাবারের তালিকায়। ২০১৪ সালে গিউলিয়ানো পোজার নামক এক আর্জেন্টাইন পুষ্টিবিদের নির্দেশনায় তিনি তার খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনেন। পোজার তাকে একটি ভূমধ্যসাগরীয় খাদ্যাভ্যাসের পরামর্শ দিয়েছিলেন। যাতে পানি, অলিভ অয়েল, আস্ত শস্যদানা, তাজা ফল ও শাক সবজিসহ ৫টি প্রধান খাবার অন্তর্ভুক্ত থাকে। এটি মেসির খাদ্যতালিকার ভিত্তি হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছিল।
এই সংমিশ্রণটি সাধারণত ভালো পুষ্টি উপাদান গ্রহণের মাধ্যমে খেলোয়াড়ের পেশীগুলোকে শক্তিশালী করে। যেটি মেসির শরীরের জন্য উপযুক্ত ছিল। এই খাদ্যাভ্যাস তার ফিটনেস বজায় রাখা এবং সর্বোচ্চ স্তরে পারফর্ম করার জন্য শরীরকে প্রস্তুত করে।
নেইমার জুনিয়র, ব্রাজিল
ব্রাজিলের জাতীয় দল এবং বার্সেলোনা ও পিএসজির মতো ক্লাবে খেলে মাঠে তার অসাধারণ পারফরম্যান্স দিয়ে লাখো মানুষের মন জয় করে নিয়েছেন নেইমার। অনেকের আগ্রহ নেইমারের ফিটনেসের রহস্য কী?
নেইমার যখন বার্সায় যোগ দেন, তখন তার লিকলিকে শরীর দেখে ডায়েটেশিয়ানরা তার পারফরম্যান্স নিয়ে সন্দিহান ছিলেন। নেইমারের খাদ্য তালিকা ৩টি ভাগে বিভক্ত– কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন ও চর্বি । এছাড়াও আছে বিভিন্ন ভিটামিন এবং মাইক্রো-নিউট্রিয়েন্টস।
কিলিয়ান এমবাপে, ফ্রান্স
কিলিয়ান এমবাপে এখন বিশ্বের সেরা খেলোয়াড় হিসেবে ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো ও মেসির উত্তরাধিকারী হওয়ার পথে। এমবাপে প্রতিদিন ৬টি স্বাস্থ্যকর খাবার খান। তার খাদ্যতালিকায় প্রচুর রঙ্গিন খাবারের সঙ্গে কার্বোহাইড্রেট ও প্রোটিন থাকে। বেনজেমার মতো এমবাপেও মাংস খাওয়ার পরিমাণকে ন্যূনতম মাত্রায় সীমাবদ্ধ রেখেছেন।
রবার্ত লেভানদোভস্কি, পোল্যান্ড
রবার্ত লেভানদোভস্কি তার স্ত্রী আনা লেভানদোভস্কার তৈরি একটি আকর্ষণীয় খাদ্যতালিকার জন্য কৃতজ্ঞ। তার স্ত্রী কারাতে বিশ্বকাপের পদক বিজয়ী এবং একজন ফিটনেস প্রশিক্ষক । 'ব্যাকওয়ার্ড ইটিং ডায়েট' নামে এক ধরনের ডায়েট করেন লেভানদোভস্কি। এখানে প্রথমে মেইন কোর্সের পরে মিষ্টান্ন এবং সবশেষে রয়েছে স্টার্টার।
লেভানদোভস্কি তার চমৎকার পারফরম্যান্সের জন্য তার ইনভারটেড খাদ্যাভ্যাসকে কৃতিত্ব দিয়েছেন। তিনি খাবার শুরু করেন খাঁটি কোকো থেকে তৈরি একটি ব্রাউনি দিয়ে। তারপরে বাছাইকৃত উৎস থেকে ভাত বা মাংস এবং স্যুপ বা সালাদ দিয়ে খাবার শেষ করেন।