দেশে করোনার প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়ার পর দ্বিতীয়বারের মতো এসএসসি পরীক্ষায় বসল শিক্ষার্থীরা। এবারের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ২০ লক্ষাধিক। প্রথম দিনে পরীক্ষা দিয়েছে ১৯ লাখ ৫ হাজারের কিছু বেশি। প্রথম দিনের পরীক্ষায় ৩৩ হাজার ৮৬০ জনের অনুপস্থিতির ঘটনা উদ্বেগজনক। ১৫ সেপ্টেম্বর এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার প্রথম দিনটি কেটেছিল নানা ঘটনা-অঘটনের মধ্য দিয়ে। এদিন কিছু কেন্দ্রে ভুল প্রশ্নপত্র বিতরণ করা হয়েছিল। ২৬ পরীক্ষার্থী প্রথম দিনই বহিষ্কৃত হয়েছিল অসদুপায় অবলম্বনের কারণে। নড়াইলে ভুল প্রশ্নপত্র দেয়ার কারণে যশোর বোর্ডের বাংলা দ্বিতীয় পত্রের এমসিকিউ অংশের পরীক্ষাই স্থগিত করতে হয়েছিল। অন্যবার সকাল ১০টায় পরীক্ষা শুরু হলেও এবার বেলা ১১টায় পরীক্ষা শুরু হয়। পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা শুরুর কমপক্ষে ৩০ মিনিট আগে কেন্দ্রে ঢুকতে হয়েছিল। এর আগে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, ২০২১ সালে মাধ্যমিক স্তরের বার্ষিক পরীক্ষায় পৌনে পাঁচ লাখের বেশি শিক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিল।
এদের মধ্যে ৪৭ হাজার ছাত্রীর বাল্যবিবাহ হয়েছিল এবং ৭৮ হাজার শিক্ষার্থী শিশুশ্রমে যুক্ত হয়েছে। এ প্রতিবেদন পূর্ণাঙ্গ ছিল না কারণ মাত্র ১১ হাজার ৬৭৯টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তথ্য থেকে এ ফিগার এসেছিল যদিও আমাদের পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৩০ হাজারেরও বেশি। নিবন্ধন করার পর কোনো শিক্ষার্থীর এসএসসি পরীক্ষায় অনুপস্থিত থাকার অর্থ তার শিক্ষাজীবনের সমাপ্তি। শারীরিক অসুস্থতার কারণে কোনো কোনো পরীক্ষার্থী গরহাজির থাকলে সেটি ভিন্ন কথা, কিন্তু দারিদ্র্যের কারণে বাল্যবিবাহ হওয়া আর ছেলেদের শিশুশ্রমে নিযুক্ত হওয়া কিন্তু উদ্বেগের বিষয়। যারা শিক্ষার নয়টি ধাপ পেরিয়ে এসএসসি পরীক্ষার জন্য নিবন্ধন করেছে, তাদের প্রত্যেকে যাতে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারে সেটি নিশ্চিত করা প্রয়োজন। করোনার ধাক্কা আমরা মোটামুটি কাটিয়ে উঠেছি কিন্তু করোনার যে অভিঘাত শিক্ষায় পড়েছে তা কাটিয়ে ঊঠতে আরো সময় লাগবে। এজন্য যেমন টেকসই কর্মসূচি নিতে হবে, তেমনি তার বাস্তবায়নেও সবাইকে এগিয়ে এগিয়ে আসতে হবে।