ভারতীয় টেলিভিশন সাংবাদিক রাজদীপ সারদেসাই করোনা মহামারি শুরুর পর একটি টিভি টক শোতে সাংবাদিক পি সাইনাথকে প্রশ্ন করেছিলেন, হাজার হাজার মানুষ এই ভয়ংকর মহামারির মধ্যেও গাজিয়াবাদ স্টেশন থেকে শত শত মাইল হেঁটে বাড়ি ফিরছে কেন, ওদের কি করোনার ভয় নেই?
সাইনাথ উত্তর দিয়েছিলেন, রাজদীপ আপনি ভুল প্রশ্ন করেছেন। প্রশ্নটা হওয়া উচিত ছিল, এত বিশালসংখ্যক মানুষ তাদের কৃষিজমি ফেলে দিল্লি-মুম্বাই শহরে এসেছিলই-বা কেন? বিহার, ঝাড়খন্ড বা পাঞ্জাবের কৃষক শেষ পর্যন্ত কৃষিকাজ করে টিকে থাকতে পারেনি কেন? তারা বসতভিটা ফেলে শহরে আসতে বাধ্য হলো কেন? গণমাধ্যমের জরুরি কাজ এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজে বের করা।
গত কয়েক মাস হলো গাজীপুরের বাটাগেট, টিঅ্যান্ডটি মাঠ এখন ইজিবাইক ধরপাকড়ের এক বিশাল গোডাউনে পরিণত হয়েছে। এসব মাঠে সব মিলিয়ে আটকে রাখা হয়েছে প্রায় ৬ হাজার ইঞ্জিনচালিত রিকশা আর ইজিবাইক। অর্থাৎ ৬ হাজার রিকশাচালক, ভ্যানচালক আর ইজিবাইকচালকের কয়েক মাস ধরে কোনো রোজগার নেই। অতিরিক্ত যানজটের কারণে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ নাকি এই ধরপাকড় করেছে।
এরই মধ্যে গাড়ি ছাড়াতে চাঁদাবাজির অভিযোগও আছে। কিন্তু অদ্ভুত ব্যাপার হলো, গরিব মানুষের ওপর ঘটে যাওয়া এই অন্যায়গুলোকে তুলে না ধরে, অনেক গণমাধ্যম বরাবরই এই ধরপাকড় অভিযানকে সমর্থন জোগাচ্ছে।
গণমাধ্যম এই প্রশ্ন ভুলেও করছে না যে যারা এসব ইজিবাইকের পার্টস (যন্ত্রাংশ) আমদানি করছে, তাদের ধরপাকড় করা হয় না কেন? সারা দেশের বিলাসবহুল শোরুমগুলোতে দেদার ইজিবাইকের পার্টস বিক্রি হচ্ছে, অথচ সেখানে নিষেধাজ্ঞা নেই কেন? তাদের সঙ্গে প্রশাসনের বোঝাপড়াটা কী? ‘কটা ব্রিফকেসের’ বোঝাপড়া? এ বিষয়ে গণমাধ্যম চুপচাপ আর কী।