মাদক পাচার নিয়ে একসময় খড়গহস্ত ছিল থাইল্যান্ড সরকার। অপরাধ প্রমাণিত না হলেও সন্দেহভাজনদের ফাঁসির দড়িতে ঝোলানো হতো। মাদক নিয়ে জিরো টলারেন্স দেখানো দেশটিতে হঠাৎ এমন কী ঘটল যে, মাদকদ্রব্যের তালিকা থেকে মারিজুয়ানাকে সরিয়ে এটির ব্যবহার বৈধ করা হলো? লিখেছেন তৃষা বড়ুয়া
মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ
খুব বেশিদিন আগের কথা নয়, যখন থাইল্যান্ড সরকার মাদক পাচারকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি দিতে পিছপা হতো না। হাত-পায়ে বেড়ি পরা কয়েদিদের ফাঁসি কার্যকর করা দেখতে দেশ-বিদেশের বড় বড় সাংবাদিকদের আমন্ত্রণ জানানো হতো। তারা চাইলে ফাঁসির দৃশ্য ভিডিও-ও করতে পারতেন। ২০০১ সালে ক্ষমতা গ্রহণের পর থাইল্যান্ডের সাবেক প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রা মূলত মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন। মাদক ব্যবসা বা পাচারের সঙ্গে জড়িত কাউকেই সে সময় ছাড় দেওয়া হতো না। সিনাওয়াত্রার এই যুদ্ধ একপর্যায়ে ভয়াবহ রূপ নেয়। যাদের মাদক পাচারের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে গ্রেপ্তার করা হতো, তাদেরও সে সময় ফাঁসির দড়িতে ঝোলানো হয়। এভাবে থাইল্যান্ডের হাজার হাজার সন্দেহভাজন মাদক পাচারকারী রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে খুন হন। এই নিয়ে থাই সমাজের কোনো মাথাব্যথা ছিল না, বরং তারা থাকসিনের ওই পদক্ষেপে খুশি ছিল। এর কারণ তরুণদের ওপর মেথামফেটামাইনসের মতো অত্যন্ত ক্ষতিকর মাদকের প্রভাব নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে থাই সমাজ উদ্বিগ্ন ছিল। তারা চাইছিল, দেশ মাদকমুক্ত হোক আর এজন্য যদি অপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়া হয়, তবে তাই সই। প্রধানমন্ত্রী থাকসিনের মাদকবিরোধী যুদ্ধের কারণে মানবাধিকার যে চরমভাবে লঙ্ঘিত হচ্ছে, তা তাদের ধর্তব্যের মধ্যে ছিল না।