এক কাপ চা আমাদের নিত্যদিনের সঙ্গী। কোনো বিষয়ে আমরা যদি একাগ্রচিত্তে কাজ করতে থাকি, তখন একপর্যায়ে দেখা যায়, আমাদের স্নায়ু বিদ্রোহ করে ওঠে, আমরা অবসন্ন বোধ করি এবং কাজে মনোযোগ দিতে পারি না। ঠিক এমনই অবস্থায় এক কাপ চা আমাদের সতেজ করে তোলে, প্রায় হারিয়ে যাওয়া প্রফুলতা ফিরে আসে। আমরা ফের কাজে মনোযোগ দিই। আধুনিক সভ্যতার বিচারে আমরা যখন সভ্য থেকে সভ্যতর হয়ে উঠি, তখন আমাদের জীবনযাত্রায় চায়ের অপরিহার্যতা অনুভব করি। দেহ ও মনকে চাঙা করে তোলা পানীয় হিসাবে চা আমাদের কর্মক্ষমতা এবং উৎপাদনশীলতা বাড়িয়ে দেয়।
চাইলে যে কোনো মানুষ সারা জীবনে এক কাপ চা পান না করেও থাকতে পারে। সেই বিচারে পানীয় হিসাবে চা আবশ্যিক কোনো ভোগ্যপণ্য নয়। কিন্তু চায়ে অভ্যস্ত হলে চাবিহীন জীবন চলতে চায় না। খাদ্য-বস্ত্র মানুষের জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী, এছাড়া মানুষ বাঁচতে পারে না। কিন্তু নিত্যব্যবহার্যের ফর্দে চা না থাকলেও জীবন থেমে থাকে না। তবে চায়ে অভ্যস্ত হয়ে উঠলে চাবিহীন অবস্থায় আমাদের অঙ্গপ্রত্যঙ্গগুলো বিদ্রোহ করে ওঠে। আমরা কাজে মনোযোগ দিতে পারি না। এমনই অবস্থায় চা হয়ে উঠে আমাদের দৈনন্দিন বাজেটে অপরিহার্য দ্রব্য। সে কারণে অর্থনীতিবিদরা চায়ের মতো পানীয়কে চিহ্নিত করেছেন Conventional necessity হিসাবে। চা পানে অভ্যস্তদের চায়ের ওপর নির্ভরশীলতা এত বেশি যে, চাকে খাদ্য পানীয়ের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া যায় না।