১৯৬৪ সালে চীন-ভারত যুদ্ধ হয়েছিল। সেই যুদ্ধের তিক্ত অভিজ্ঞতা চীনকে পরমাণু অস্ত্র তৈরির পথে নিয়ে যায় এবং দেশটি পরমাণু অস্ত্র হস্তগতও করে। এর এক দশক পর রাজস্থানের পোখারায় ভারতও সফলভাবে পারমাণবিক বোমার পরীক্ষা চালায়। আর ভারতের প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান পারমাণবিক বোমার পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু করেছিল গত শতকের আশির দশকে।
এশিয়ার এ তিনটি দেশ কাছাকাছি সময়ে পারমাণবিক অস্ত্রের দিকে যাত্রা শুরু করার পর তিনটি দেশই তাদের অস্ত্রভান্ডার ক্রমশ বাড়িয়েছে। বর্তমানে চীনের ৩৫০টি পরমাণু ওয়ারহেড রয়েছে। ভারতের রয়েছে ১৬০টি, আর পাকিস্তানের রয়েছে ১৬৫টি।
তবে শুরুর দিকে তিনটি দেশই পরমাণু অস্ত্রের সংখ্যা বাড়ানো নিয়ে দ্বিধাগ্রস্ত ছিল। যুক্তরাষ্ট্রের মূল ভূখণ্ডে আঘাত হানতে পারে এমন সক্ষমতাসম্পন্ন ক্ষেপণাস্ত্র ১৯৮০ সাল পর্যন্ত তৈরি করেনি চীন। কিন্তু পরে চীন সেই নীতি থেকে সরে আসে। গত কয়েক বছরে শত শত নতুন ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করেছে বেইজিং।
পাকিস্তানও ধীরে ধীরে পরমাণু অস্ত্রের দিকে এগিয়েছে। ২০০৭ সালে পাকিস্তানের মাত্র ৬০টি পারমাণবিক ওয়ারহেড ছিল। ১৫ বছর পর সেই সংখ্যা প্রায় তিন গুণ বেড়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তিনটি দেশই পারমাণবিক অস্ত্র মজুতের দিক থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়াকে অনুসরণ করছে। ভূমি থেকে ভূমিতে, আকাশে ও সমুদ্রে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করছে।
ওয়াশিংটনভিত্তিক থিংক ট্যাংক কার্নেগি এনমাউন্টের গবেষক অ্যাশলে টেলিস এক প্রতিবেদনে বলেছেন, এশিয়ার তিনটি দেশই পরমাণু শক্তিতে বলীয়ান হয়ে উঠছে। কাশ্মীর নিয়ে যেকোনো সময় ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সংঘর্ষ বাধবে, এমন একটি ধারণা ১৯৯৮ সাল থেকেই করে আসছে পশ্চিমা দেশগুলো। সেই সংঘর্ষের প্রস্তুতি হিসেবে দেশ দুটি পরমাণু অস্ত্রে শান দিচ্ছে।