আমাদের দুর্ভাগ্য যে আমাদের দেশের মূল চারটি শক্তি ও সম্পদকে দেশের বিভিন্ন ধরনের উন্নয়ন পরিকল্পনায় আজ পর্যন্ত প্রধান উপাদান হিসেবে বিবেচনায় রাখা হয়নি। আমরা এ চার সম্পদ ও শক্তির মধ্যে সমন্বয় করার কথা কখনো সেভাবে ভাবিনি কিংবা ভাবতে পারিনি। এমনকি রাষ্ট্রের স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদের সব পরিকল্পনায় আমরা নিজস্ব শক্তিগুলোকে প্রাধান্য দিইনি। অস্পষ্ট অনেক কারণেই আমরা দেশকে নিজ পায়ে দাঁড় করানোর পরিবর্তে পরনির্ভরশীল করে রাখাকে মেনে নিয়েছি। কখনো সেটা ব্যক্তিবিশেষ ও গোষ্ঠীর স্বার্থে আবার কখনো নিজেদের অজ্ঞতা ও লোভের কারণে। এ বিষয় নিয়ে আলাপ-আলোচনাও যে খুব হয়েছে বা হচ্ছে তা নয়। কারণ হয়তো অনেকটা সেই রাস্তায় চলা জরাজীর্ণ মিনিবাসের মতো—চলছে তো, থেমে নেই। আর এ ভাব নিয়েই আমরা ৫০ বছর বয়সী রাষ্ট্রে ‘বিন্দাস’ হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছি, জীবন কাটাচ্ছি।
অথচ এই আমরাই যদি মাটি, পানি, বায়ু ও জনশক্তি ঘিরে একটা দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার আওতায় স্বাধীনতার পর থেকে এগোতে থাকতাম তাহলে আজকে ৫০ বছর পর আমরা এমন একটা জাতি পেতাম যে জাতি যেকোনো বিপদে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে একে অন্যের পাশে দাঁড়িয়ে শক্ত হাতে বিপদকে মোকাবেলা করত। তার পরিবর্তে আমরা এমন একটা দেশ গড়ে তুলেছি যে দেশে তরুণদের অপশন দেয়া হলে সবাই দেশ ছেড়ে চলে যেতে চাইবে। আমাদের মেধাবী তরুণরা এ দেশের কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় জীবন শেষে যত তাড়াতাড়ি পেরেছে বিদেশে পাড়ি জমিয়েছে। আমরা তাদের জন্য এমন কোনো কর্মপরিবেশ ও গবেষণার ব্যবস্থা তৈরি করতে পারিনি যার মাধ্যমে তারা মাটি, পানি, বায়ুকে এ দেশের মানুষের কল্যাণে বিভিন্নভাবে ব্যবহার উপযোগী করে তুলবে।