জুলাইয়ের দুর্বিষহ গরমে এক বিকেলের কথা। মধুবনি জেলার সৌরথ গ্রামের একটি মাঠের কোনায় দাঁড়িয়ে আছেন নির্ভয় চন্দ্র ঝা। ৩৫ বছর বয়সী এই ব্যক্তির চেহারায় কিছুটা সংশয়। আজ একটি বিশেষ দিন তাঁর জন্য।
বেগুসারাই থেকে ১০০ কিলোমিটারের বেশি পথ পাড়ি দিয়ে তিনি সৌরথ গ্রামের এই মাঠে এসেছেন। কারণ এ মাঠে বসেছে ‘সভা’ বা বার্ষিক ‘বরবাজার’। নির্ভয়ের প্রত্যাশা, কোনো উপযুক্ত কনে পরিবারের নজরে পড়বেন তিনি। এই ‘বরবাজারে’র জন্য বিহারের গ্রামটি বিখ্যাত।
৭০০ বছরের পুরোনো এই ঐতিহ্যবাহী হাটে বিয়ে করতে আগ্রহী মৈথিল ব্রাহ্মণ পরিবারের ছেলেরা আসেন। তাঁদের প্রত্যেকেই নিজের জন্য পণের ট্যাগ লাগিয়ে রাখেন। হাটে আসা বিবাহযোগ্য মেয়ের পুরুষ অভিভাবকেরা, সাধারণত বাবা বা ভাই উপযুক্ত পাত্রকে বেছে নেন। সাধারণত এই প্রক্রিয়ায় কনের পছন্দ বা অপছন্দ কিছুই বলার থাকে না।
বিহারের মিথিলাঞ্চলে বসবাসকারী হিন্দু ব্রাহ্মণদের একটি উপগোষ্ঠী মৈথিল ব্রাহ্মণ। ব্রাহ্মণ সম্প্রদায় হলো হিন্দুদের বিভিন্ন বর্ণের মধ্যে প্রভাবশালী সামাজিক গোষ্ঠী। ঐতিহাসিকভাবে এ গোষ্ঠী সমাজের সুযোগ-সুবিধা উপভোগ করে আসছে।
মৈথিল ব্রাহ্মণ পরিবারের ছেলে নির্ভয় অপেক্ষায় আছেন, যেকোনো মুহূর্তে কোনো পাত্রীর পরিবার তাঁর কাছে এসে পণ নিয়ে আলোচনায় বসতে পারেন। প্রকাশ্যে তিনি নিজের জন্য ৫০ হাজার রুপির (৬৩০ ডলার) ট্যাগ লাগিয়ে রেখেছেন।
নির্ভয় আল–জাজিরাকে বলেন, ‘আমার বয়স আরও কম হলে সহজেই আমি দুই থেকে তিন লাখ রুপি যৌতুক চাইতে পারতাম।’
হিন্দুরা সমজাতির মধ্যে বিশেষ করে, একই বর্ণের মধ্যে বিয়েকে উত্সাহিত করে। কারণ, এ ধরনের বন্ধনগুলো বেশির ভাগ পরিবার থেকে আয়োজন করে করা হয়।