রাজ্য সরকার নতুন জমি-নীতি তৈরি করছে। প্রস্তাবটি চমকপ্রদ— কেএমডিএ, আসানসোল-দুর্গাপুর ডেভলপমেন্ট অথরিটির মতো স্থানীয় প্রশাসনের অধীনস্থ ‘উদ্বৃত্ত’ জমি নিলামে তোলা হবে, এবং ক্রেতাকে একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ‘লিজ়’-এ না দিয়ে সরাসরি ‘ফ্রি হোল্ড’ জমি হিসেবে দেওয়া হবে। অর্থাৎ, সেই জমিকে ক্রেতা ইচ্ছেমতো যে কোনও কাজে লাগাতে পারবেন।
শিল্প অথবা শপিং মল, যা ইচ্ছে করা যাবে, মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন। এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব বিধানসভায় আলোচিত হয়নি। ফলে এর পক্ষে-বিপক্ষে যুক্তিগুলি কী, কেনই বা কলকাতা বা দুর্গাপুরের অতি মূল্যবান জমি সরকার বাণিজ্যিক সংস্থাকে ইচ্ছেমতো ব্যবহারের জন্য দিতে চায়, কিছুই স্পষ্ট নয়। বর্তমানে যে সব জমি ‘লিজ়’ দিয়েছে সরকার, সেগুলোও ক্রমে-ক্রমে ‘ফ্রি হোল্ড’ ঘোষণা হবে কি না, তা এখনও অজানা। জমির মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ‘নীতি’ নির্ধারণের প্রক্রিয়ায় এমন অস্বচ্ছতা বড়ই অস্বস্তিকর।
সরকারি আধিকারিকরা জানিয়েছেন, এর ফলে জমির ব্যবহারে বাধা ঘুচবে। শিল্প করার জন্য জমি লিজ়-এ নেওয়ার পরে দীর্ঘ দিন তা ফেলে রাখার নজির প্রচুর। কখনও শিল্প তৈরি করাই অলাভজনক মনে হয় ক্রেতা সংস্থার, কখনও শিল্প তৈরি করেও তাঁরা চালাতে পারেন না। শিল্প বা উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য জমি নিয়ে সেখানে আবাসন বা শপিং মল তৈরি হয়েছে, এমন নিদর্শন কম নয়। অতএব জমি ‘ফ্রি হোল্ড’ করার কিছু সুবিধা খুঁজে পাওয়া যায়। প্রথম, জমির ব্যবহারে বিলম্ব এড়ানো। জমি লিজ় নেওয়ার পর ব্যবহারের শর্ত বদলের অনুমোদন পাওয়ার প্রক্রিয়া দীর্ঘ, জটিল এবং প্রায়ই দুর্নীতি-পঙ্কিল। অতএব শর্ত আরোপ না করলে শিল্পপতিদের হয়রানি কম হবে।