খালদুন সম্পর্কে আমেরিকার অন্যতম সফল ও রক্ষণশীল প্রেসিডেন্ট কী বলেছিলেন। ১৯৮১ সালে Supply side economics-এর (যার আরেক নাম ‘রেগানোমিক্স’) তত্ত্ব দিতে গিয়ে তত্কালীন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগান ইবনে খালদুনকে স্মরণ করে বলেছিলেন, ‘রাজত্বের শুরুতে অল্প অল্প করে কর আরোপ করায় অনেক বেশি রাজস্ব আমদানি হতো এবং পরের দিকে করের হার বাড়াতে মোট রাজস্ব আয় কমে যেত’। রাজস্ব নীতির বেলা, আধুনিককালের প্রেসিডেন্ট রিগান, মধ্যযুগীয় মনীষী ইবনে খালদুনের করনীতির একজন ভক্ত-অনুসারী ছিলেন। এতে দেখা যায়, শাস্ত্রীয় পণ্ডিত থেকে শুরু করে রাষ্ট্রনায়করাও খালদুনকে স্বীকৃতি দিতে শুরু করেছেন।
শুধু তা-ই নয়, কী কী সুনির্দিষ্ট নীতিমালার ভিত্তিতে করারোপ করা যেতে পারে, এ আরব সমাজবিজ্ঞানী তার ওপরও স্পষ্ট আলোকপাত করে গেছেন। সেসব কথা পাওয়া যায় ২০১৫ সালে Turkish Journal of Islamic Economics-এ প্রকাশিত আব্দুল আজিম ইস্লাহির গবেষণায় ও লেখায়। এখানে খালদুনের করনীতিমালার যে বিস্তারিত বর্ণনা পাওয়া যায় তা সংক্ষেপে এ রূপ: ন্যায্যতা, ন্যায়পরায়ণতা, কার্যকারিতা, দক্ষতা, সামর্থ্য, কৃচ্ছ্রতা, সামাজিক সুবিধা, জনকল্যাণ ও জনমানুষের মঙ্গল ইত্যাদি। মূলত এসব খালদুনীয় ধারণা, অথচ এগুলোকে আজকাল অ্যাডাম স্মিথের নামেই চালিয়ে দেয়া হচ্ছে। এজন্য জ্যঁ বোলাকিয়া ১৯৭১ সালে Journal of Political Economy-তে প্রকাশিত তার গবেষণায় সঠিকভাবেই একটি মন্তব্য করেছেন, ‘এসব ধারণার প্রকৃত পিতা যিনি, তার কাছে পিতৃত্ব ফিরিয়ে দেয়া উচিত’।