সদ্য সমাপ্ত রাজনৈতিক সংলাপে ইভিএম ব্যবহার না করার বিষয়ে পাল্লা ভারি দেখা গেছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগসহ কয়েকটি দল ইভিএমের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। ক্ষমতাসীন দল চেয়েছে— তিনশ’ আসনে ইভিএম ব্যবহার। তবে সংলাপে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল ও পেশাজীবী এর বিরুদ্ধে মত দিয়েছে। পক্ষের কয়েকটি দলও ইভিএম ব্যবহারের আগে ভোটের নিরাপত্তা ও ভোটারদের আস্থা অর্জনের কথা বলেছে। ক্ষমতাসীন জোটের শরিকদের কেউ কেউ মত দিয়েছে— ইভিএমের বিপক্ষে। সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টি স্থানীয় নির্বাচনে ইভিএমে অনাপত্তি জানালেও ঘোর বিরোধিতা করেছে সংসদ নির্বাচনে এ যন্ত্রের ব্যবহার নিয়ে। আসন্ন গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচনে ইভিএম হলে তারা অংশ না নেওয়ার ঘোষণাও দিয়েছে।
সব মিলিয়ে রাজনৈতিক দল ও ভোটারদের আস্থায় এনে জাতীয় নির্বাচনে ইভিএমের (ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন) ব্যবহার নিয়ে অনেকটা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। রাজনৈতিক সংলাপের শেষ পর্যায়ে এসে ‘ইভিএমকে একটি সংকট’ বলে জানিয়েছে খোদ নির্বাচন কমিশন।
‘সিদ্ধান্ত নেইনি’ এবং ‘তিনশ’ আসনে ইভিএমের সক্ষমতা নেই’— এ ধরনের বক্তব্য ইসি থেকে এলেও ভোটার ও রাজনৈতিক দলের কাছে ইভিএমের আস্থা অর্জনে ভেতরে-বাইরে কাজ শুরু করে তারা। এর অংশ হিসেবে প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ ও রাজনৈতিক দলকে ইভিএম প্রদর্শনীর উদ্যোগ নেয় তারা। ইভিএম প্রদর্শনীতে প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ ও কিছু দলের ইতিবাচক মনোভাব ইসিকে উৎসাহিত করে। বিশেষ করে ইভিএম পর্যবেক্ষণের পর অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবালের প্রতিক্রিয়া ইসিকে আগ্রহী করে তোলে। এছাড়া ইভিএমে অনুষ্ঠিত কুমিল্লা সিটিসহ অন্যান্য ভোটও ইসির আগ্রহ বাড়িয়েছে।
এ সময় ইসির পক্ষ থেকে ইভিএমের ভুল ধরিয়ে দিতে পারলে ১০ মিলিয়ন ডলার পুরস্কার, ইভিএমের মধ্যে চ্যালেঞ্জ ভোটকক্ষে ডাকাত, ইভিএমে হ্যাকিং সম্ভব নয়— এমন বক্তব্য আসে ইসির থেকে। ইভিএমে ভোটগ্রহণের ধীর গতি দূর করতে একটি বাটনও বাদ দেওয়ার চিন্তা হয়।
নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আহসান হাবিব খান ইভিএম প্রদর্শনীর পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, ‘কিন্তু কেউ কেউ (রাজনৈতিক দলের) বিরোধিতা করছেন, কেউ কেউ পক্ষে আছেন, কেউ কেউ পক্ষে এসেছেন মোডিফিকেশন করার পরে।’ তিনি বলেন, ‘ব্যালট পেপার ও ইভিএমের মধ্যে তুলনা করলে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করার ক্ষেত্রে ইভিএম এগিয়ে থাকবে। ইভিএমে একজনের ভোট আরেকজন দিতে পারে না।’