গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের চরাঞ্চল পাড়াসাদুয়া গ্রামের তিস্তা নদীর কোলা (গভীর স্থান) থেকে দুই বোন হাসি বেগম (১৪) ও খুশি বেগমের (১২) মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় পুলিশ তাদের বাবা-মা’কে আটক করেছে। হাসি ও খুশির মা আদুরী বেগম ও বাবা হামিদুল ইসলাম এ নিয়ে পরস্পরবিরোধী কথাবার্তা বলায় তাদের জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড চেয়ে বৃহস্পতিবার আদালতে আবেদন করেছেন মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা কঞ্চিবাড়ি পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ পরিদর্শক মানষ রঞ্জন দাস। রোববার বিকেলে দুই বোনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
জানা গেছে, এক বছর আগে হাসি ও খুশির বাবা হামিদুল ইসলাম তাদের মা আদুরী বেগমকে আদালতের মাধ্যমে তালাক দেন। আদালত ও স্থানীয় সালিশি সভার সিদ্ধান্তে হাসি বেগম তার বাবার সঙ্গে উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের কানিচরিতাবাড়ি গ্রামে থাকতো। খুশি বেগম তার মা’র সঙ্গে নানার বাড়ি কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার খামার বজরা মধ্যপাড়া গ্রামে থাকতো। এক মাসের মধ্যে হাসি বেগম তার নানার বাড়িতে চলে যায়। মাঝে মধ্যে মোবাইল ফোনে বাবার সঙ্গে কথাবার্তা বলতো দুই বোন।
মামলার বাদী এবং হাসি ও খুশির নানী খতেজা বেগম জানান, হত্যার এক সপ্তাহ আগে হাসির বাবা হামিদুল ইসলাম মোবাইল ফোনে তাকে স্থানীয় কাশিমবাজারে ডেকে নিয়ে কসমেটিক কেনার জন্য ৫০০ টাকা দেন। এরপর শনিবার বিকেলে ঈদের কেনাকাটা করে দেয়ার জন্য হাসি ও খুশিকে তার বাবা মোবাইল ফোনে কাশিমবাজারে ডাকলে তারা সেখানে চলে যায়। সন্ধ্যার পরও মেয়েরা বাড়িতে ফিরে না এলে আদুরী বেগম মোবাইল ফোনে মেয়েদের অবস্থান জানতে চান। হামিদুল ইসলাম জানান তারা চলে গেছে। অনেক খোঁজাখুজির পরও রাতে তাদের পাওয়া যায়নি। পরদিন রোববার সকালে স্থানীয়রা নদীর মধ্যে দুই বোনের মরদেহ দেখতে পান। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহের সুরতহাল রিপোর্ট করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়। পাশাপাশি জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মা, বাবা, মামা ও নানিকে থানায় নিয়ে যান। এ বিষয় নিয়ে পরস্পরবিরোধী কথাবার্তা বলায় হামিদুল ইসলাম ও আদুরী বেগমকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে সোমবার জেলহাজতে পাঠায় পুলিশ।