“ছেলেমেয়ের জন্য কী না করেছি; তাদের কত আবদার পূরণ করেছি। এক সময় ছেলেকে নিয়ে ঈদের নামাজ আদায় করেছি, কতকিছু কিনে দিয়েছি। আজ আমাকে ছুড়ে ফেলে দিল ওরা। খুব মনে পড়ে, ঈদের দিন খুব বেশি মনে পড়ে। আজ আমি ওদের কাছে বোঝা হয়ে গেছি।”
কথাগুলো বলছিলেন ফরিদপুরের বৃদ্ধাশ্রম ‘শান্তিনিবাসের’ বাসিন্দা ফারুক মিয়া (৭৫)। ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার এই বৃদ্ধ এখানে রয়েছেন চার বছর ধরে। তিনি ৪ মেয়ে ও ২ ছেলের জনক।
শান্তিনিবাসে ঈদের আগের দিন সোমবার ফারুক মিয়ার সঙ্গে কথা হয় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম প্রতিনিধির।
তিনি বলেন, প্রায় ১০ বছর আগে স্ত্রী ও ছেলে, মেয়েরা চক্রান্ত করে সকল সম্পত্তি তাদের নামে করে নেয়। এরপর তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। এরপর নিরুপায় হয়ে বিভিন্ন স্থানে দিন কাটছিল। পরে ঠাঁই হয় শান্তিনিবাসে।
“আমি অসুস্থ, পরিবারের সবার কথা খুব মনে পড়ে; কিন্তু কেউই আমার খোঁজ নেয় না। এখন এই শান্তিনিবাসে আছি। এরা খুব ভালোবাসে।”
সমাজসেবা অধিদপ্তরের নিয়ন্ত্রণাধীন ফরিদপুর শহরের টেপাখোলা এলাকায় অবস্থিত শান্তিনিবাসে রয়েছেন ১১ জন নারী ও চার জন পুরুষ।
এই বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের এক সময় স্বপ্নময় দুরন্ত শৈশব ছিল; রঙিন কৈশোর ছিলো। যৌবনে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে কত আনন্দই না করেছেন। সন্তানের চাওয়া পূরণ করেছেন, সন্তানের যাতে কষ্ট না হয়, তার খেয়াল রেখেছেন। ঈদ উৎসবে তাদের বায়না মেটানোর আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন। আজ তাদের ঠাঁই হয়েছে শান্তিনিবাসে। পরিবারের সেসব সদস্যরা আজ তাদের খোঁজ-খবর নেয় না।