২০১৪ সালের জুলাই মাসের ঘটনা। রাজধানীর বাড্ডায় তোবা গ্রুপের পাঁচ কারখানার ১ হাজার ৬০০ শ্রমিক তিন মাসের বেতন, ওভারটাইম ও ঈদ বোনাস না পেয়ে ঈদুল ফিতরের আগের দিন থেকে অনশন শুরু করেন। ঈদের দিনসহ টানা ১১ দিন অনশন করার পর শ্রমিকেরা বেতন পান। এ জন্য পুলিশের লাঠিপেটা, এমনকি রাবার বুলেটও জুটেছে শ্রমিকদের কারও কারও ভাগ্যে।
অভিযোগ আছে, শ্রমিকদের বেতন-ভাতার ওই আন্দোলনকে পুঁজি করে তোবার মালিক দেলোয়ার হোসেন তখন কারাগার থেকে জামিনে ছাড়া পান। ২০১২ সালের নভেম্বর তাজরীন ফ্যাশনসের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ১১১ শ্রমিককে পুড়িয়ে মারার অভিযোগে তিনি কারাগারে ছিলেন।
তোবার সেই ঘটনার পর দেশ-বিদেশে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছিল রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক খাত। তারপর প্রায় আট বছর হতে চলল। তবে পরিস্থিতির খুব বেশি উন্নতি হয়নি। তোবার সেই পাঁচ কারখানার মতো আর বড় ঘটনা না ঘটলেও, প্রতি ঈদের আগেই বেতন-ভাতার দাবিতে কিছু কারখানার শ্রমিককে সড়কে নামতে হচ্ছে। শ্রমিকেরা সড়ক অবরোধ করলে অনেক ক্ষেত্রেই পুলিশ লাঠিপেটা করছে। সেই খবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ ও বিকেএমএইর নেতারা তৎপর হচ্ছেন। তাতে কিছু কারখানার সমস্যা সমাধান হয়। তবে কিছু কারখানার শ্রমিককে বেতন-ভাতা ছাড়াই নিরানন্দ ঈদ করতে হয়। এবারের পবিত্র ঈদুল ফিতরেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। অনেক কারখানার শ্রমিকই বেতন-ভাতা পাননি।
গাজীপুরের ভোগড়া এলাকার জিএম অ্যান্ড জেসি কম্পোজিট লিমিটেড নামের একটি তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা বেতন ও বোনাসের দাবিতে শনিবার থেকে অবস্থান নেন। কারখানার ভেতরেই রাত যাপন করেছেন তাঁরা। কারখানার ভেতরেই পানি-বিস্কুট খেয়ে ইফতারি ও সাহ্রি করেছেন শ্রমিকেরা। রোববার বেলা দুইটায়ও কারখানার ভেতরে শ্রমিকেরা অবস্থান করছিলেন। বেতন-বোনাস না নিয়ে কারখানা ছাড়বেন না বলে জানিয়েছেন শ্রমিকেরা।