‘এবার অনেক ভিড়।’
ঈদের কেনাকাটা করার পর ধানমন্ডির এক সুপার মার্কেটের নিচে এভাবেই অনুভূতি জানালেন কলেজপড়ুয়া মেয়ে। মায়ের সঙ্গে দুই বছর পর সরাসরি ঈদের কেনাকাটা করতে এসেছেন তিনি।
আবার এই ভিড়কে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন স্থপতি হাবিব হাসান। লালমাটিয়ার আড়ংয়ে গত শুক্রবার স্ত্রীকে নিয়ে ঈদের কেনাকাটা করতে এসেছিলেন তিনি। কী রঙের পোশাক কিনছেন এবার? হাবিব হাসান বললেন, ‘উজ্জ্বল ও একটু “প্যাস্টাল” ধরনের।’ কাপড়ের এই প্যাস্টাল রংকে সাধারণ ক্রেতারা ‘পেস্ট কালার’ হিসেবেই চেনেন। রংটি হলো সতেজ সবুজ। শাড়ি, কামিজে এই রং এবার চলছে বেশি।
গরমকালে ঈদ হওয়ার কারণে ফ্যাশন হাউসগুলোও হালকা কিন্তু উজ্জ্বল রঙের পোশাককে প্রাধান্য দিচ্ছে। সতেজ, সজীব ভাব আনতে নানা রকম সবুজ বেশি দেখা যাচ্ছে বাজারে। কে ক্র্যাফটের অন্যতম উদ্যোক্তা খালিদ মাহমুদ খানের কথাও এই ধারা সমর্থন করে। তিনি বলেন, ‘গরমের কারণে ক্রেতা–বিক্রেতা সবাই আরামকেই প্রাধান্য দিয়েছে। করোনার কারণে দুই বছর পর এবার বাজারে গিয়ে ঈদের কেনাকাটা করা যাচ্ছে। তাই নকশায় “মুক্তি” বিষয়টি আসছে।’
‘এখন বাংলাদেশে উন্নত মানের ভয়েল ও পপলিন কাপড় তৈরি হচ্ছে। ছাপার ক্ষেত্রে উন্নত ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করার ফলে এবারের ঈদে বাংলাদেশি ছাপা কাপড়ই বেশি চলছে। এ ছাড়া থ্রিডি প্রিন্টের প্রযুক্তিও বাংলাদেশে ব্যবহৃত হচ্ছে। এবার বাজারে ছাপা নকশার কাপড়ের ৫০ শতাংশের বেশি বাংলাদেশে তৈরি। পাঞ্জাবির ক্ষেত্রে এ হার কিছুটা কম।’
মো. আবদুল মোমেন মোল্লা, নরসিংদী টেক্সটাইল ডায়িং অ্যান্ড প্রিন্টিং অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ও মাধবদী মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের কোষাধ্যক্ষ
করোনার পরে মুক্তভাবে ঈদ উদ্যাপন ও কেনাকাটার বিষয়টিকেই নকশায় মূল উপজীব্য করেছে ফ্যাশন হাউস লা রিভ। প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও পরিচালক মুন্নুজান নার্গিস বলেন, ‘এবার আমাদের ডিজাইন ভাবনার নাম দিয়েছি পুনর্জন্ম। করোনার মধ্যে যে ধরনের জীবনযাপন আমরা করেছি, সেটি থেকে বেরিয়ে আবার আমরা মুক্ত জীবনে ফিরে এসেছি। এটাও একধরনের পুনর্জন্ম।’
ফ্যাশন হাউস আড়ং উপকরণ হিসেবে এবার বেছে নিয়েছে সুতি, লিনেন, মসলিন, সিল্ক ও ভিসকসের মতো কাপড়। তাদের রং–নকশায়ও উজ্জ্বলতা এগিয়ে। গ্রীষ্মকালীন রংগুলোই উঠে এসেছে পোশাকে। পাশাপাশি নানা রকম প্যাস্টাল শেড। ঈদপোশাকে প্রায় সব ফ্যাশন হাউসের উপকরণ ও রং–নকশার ধারা এবার এমনই।