তৃণমূল থেকে নেতৃত্ব তৈরির পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে বিএনপি। এ জন্য কাউন্সিলকেই প্রাধান্য দিচ্ছে দলটি। কিন্তু স্থানীয় প্রশাসনের অনুমতি না পাওয়া, ক্ষমতাসীন দলের বাধা ও হামলার আশঙ্কায় বেশিরভাগ জেলা ও উপজেলায় কাউন্সিল করা সম্ভব হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন দলটির নেতারা। এর পরও বেশকিছু জায়গায় কাউন্সিল শেষ হয়েছে এবং কিছু জায়গায় এ মাসেই করা হবে বলে জানা গেছে। আর এর জন্য রমজান মাসকে সাংগঠনিক মাস হিসেবে ধরে দল পুনর্গঠনের কাজে ব্যস্ত সময় পার করতে চায় বিএনপি।
একইসঙ্গে এ মাসে সরকার বিরোধী বৃহৎ জোট গঠনের প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে চায় দলটি। নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের দাবিতে নতুন জোট গঠনই এখন দলটির প্রধান এজেন্ডা। এ জন্য ডান-বামসহ রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাদের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। এরই মধ্যে অনেক দলের সঙ্গে এক দফা আলোচনা শেষ হয়েছে। এর বাইরে বেশ কয়েকটি বাম দলের শীর্ষ নেতার সঙ্গেও কথা বলেছেন বিএনপি নেতারা। রমজানে ইফতার মাহফিল ঘিরে জাতীয় ঐক্য গঠনের সব ধরনের চেষ্টা করবে বিএনপি।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের ওয়ার্ড পর্যায়ে সম্মেলনে প্রায় প্রতিটিতে পুলিশ বাধা দিয়েছে, যার কারণে দলের সিনিয়র নেতারা পুলিশ কমিশনারের কাছে গিয়ে লিখিত আবেদনও করেন। এরপরও বাধা দেওয়া হয়েছে, নেতাকর্মীদের আটক করা হয়েছে। বাগেরহাট, ময়মনসিংহ, পটুয়াখালীসহ প্রায় প্রতিটি জেলার উপজেলা সম্মেলনে পুলিশি বাধা দেওয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, বিএনপির তৃণমূল পর্যায়ের প্রতিটি কাউন্সিলেই বাধা দেওয়া হচ্ছে। যেখানে কাউন্সিলের জন্য অনুমতি চাওয়া হয়, সেখানে দেওয়া হয় না; যেদিন চাওয়া হয়, সেদিন দেওয়া হয় না; যতক্ষণ সময়ের জন্য চাওয়া হয়, ততক্ষণ সময় দেওয়া হয় না। অনেক দেনদরবার করে প্রতিটি কাউন্সিলের জন্য অনুমিত নিতে হচ্ছে বলে সময়ক্ষেপণ হচ্ছে। আবার যেসব জায়গায় অনুমতি এখন দেওয়া হচ্ছে না, সেসব জায়গায় কাউন্সিল প্রক্রিয়া শুরু করা যায়নি।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, দলের কমিটি গঠন বা হালনাগাদ চলমান প্রক্রিয়া। তবে সরকার ও প্রশাসনের বাধা-বিপত্তি, নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলার পর মামলার কারণে দেশের কোথাও বিরোধী দলের নেতাকর্মীরা একত্র হতে পারছেন না। এর পরও তারা সাধ্যমতো চেষ্টা করছেন। সারাদেশে দল পুনর্গঠন কার্যক্রম চলছে। একইসঙ্গে বিএনপি দীর্ঘ সময় ধরে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন করছে। দেশের জনগণকে মুক্ত করতে হলে বৃহৎ রাজনৈতিক ঐক্য প্রয়োজন। এটি শুধু বিএনপির বিষয় নয়, সব রাজনৈতিক দল, সংগঠন, ব্যক্তির জন্য। দেশকে বাঁচাতে অচিরেই সেই ঐক্য গড়ে উঠবে বলে বিশ্বাস করি।