সময়টা খুব বেশিদিন আগের নয়। কথিত আরব বসন্তের ঢেউয়ে উত্তাল গোটা মধ্যপ্রাচ্য। লিবিয়াসহ সমৃদ্ধ দেশগুলো যুদ্ধের তাণ্ডবে ক্ষত-বিক্ষত। প্রাণ বাঁচাতে শত শত মাইল পাড়ি দিয়ে ইউরোপে প্রবেশ করেন লাখো মানুষ। কিন্তু তাদের ঠাঁই দিতে গড়িমসি শুরু করে গোটা ইউরোপ।
শুরুতে জার্মানি স্বতঃস্ফূর্তভাবে আশ্রয় দিলেও ইউরোপের বাকিদের দেখাদেখি তারাও কড়াকড়িতে মত দেয়। ফলে দেশে দেশে সীমান্তে অমানবিক আচরণের শিকার হন ভাগ্যাহত মানুষগুলো। অনেককে কুকুর-বেড়ালের মতো তাড়িয়ে দেওয়া হয়। কেউ কেউ শিকার হন মারধরের। সমুদ্রতটে আয়লান নামে সিরিয়ার এক শিশুর মরদেহ প্রতীক হয়ে ওঠে গোটা মধ্যপ্রাচ্যের শরণার্থী সমস্যার।
অথচ, পুরো যুদ্ধটাই ছিল পশ্চিমা এজেন্ডার বাস্তবায়ন। এমনই মত, প্রাচ্যতাত্ত্বিক ভিয়াচে স্লাভ মাতুজভের মতো অনেকের। তারা বলছেন, গণতান্ত্রিক মুখোশ পরে সুনির্দিষ্ট এজেন্ডা নিয়ে মাঠে নেমেছিল পশ্চিমারা। তাদের এই কাজের প্রাথমিক ভিত্তি দাঁড় করিয়েছেন, ওয়ায়েল ঘানিম, এশরা আব্দেল ফাত্তাহ, ওয়ালিদ রাশেদ, আসমা মাহফুজের মতো তরুণরা।
যারা পড়াশোনা করেছিলেন মার্কিন মুল্লুকে। কীভাবে একটি প্রতিবাদী আন্দোলন তৈরি করতে হয়, সেই নির্দেশনা দিয়ে হ্যান্ডবিল, রুসিয়ার তৈরি করা হয়েছিল। কথিত ওই আরব বসন্ত কোমড় ভেঙে দিয়েছে অধিকাংশ আরব দেশের। সমৃদ্ধ-সম্পদশালী লিবিয়া, ইরাক আজ ধ্বংসস্তূপ। আরও কয়েক দশক হয়তো সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারবে না এই দেশগুলো।
জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা, ইউএনএইচসিআরের তথ্য বলছে, ২০২০ সাল পর্যন্ত এক দশকে ৪ কোটির বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়ে বিভিন্ন দেশে আশ্রয় নিয়েছেন। যাতে বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮ কোটি ১০ লাখের বেশি। অর্থাৎ ১০ বছরে শরণার্থীর সংখ্যা দ্বিগুণে পৌঁছেছে। বাস্তুচ্যুত হওয়ার পর সমস্যা কেটে যাওয়ায় নিজ ভূমিতে যারা ফেরত গেছেন, এ সংখ্যার মধ্যে তারা বাদ পড়েছেন।