দেশের উচ্চ শিক্ষায় বাংলা ভাষার ব্যবহার ও পঠন-পাঠন দিন দিন কমছে। লেখাপড়ার বাজারমুখী কাঠামোর কারণে বাংলা ভাষা ও সাহিত্য যেন অনেকটাই নির্বাসনে। বাজার চাহিদা বিবেচনায় চিকিৎসা, প্রকৌশল বিদ্যার পাশাপাশি বিবিএ, এমবিএ, কম্পিউটার বিজ্ঞান, টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং, ফ্যাশন ডিজাইনিংসহ কয়েকটি বিষয় বেশি করে পড়ছেন শিক্ষার্থীরা। স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের বিভিন্ন বিষয় মূলত ইংরেজিতেই পড়ানো হচ্ছে। কৃষি শিক্ষায় বাংলা বই ও বাংলা ভাষায় পাঠদান কিছুটা দেখা গেলেও চিকিৎসা ও প্রকৌশল পাঠের ক্ষেত্রে তা পুরোপুরি অনুপস্থিত।
দেশের ইংরেজি মাধ্যম স্কুলগুলোতেও বাংলার ব্যবহার নামমাত্র। সারাদেশে ১০৫টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। এগুলোর মধ্যে মাত্র ১৮টিতে বাংলা পড়ানো হয়। বেসরকারি বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পর্যন্তও দেখা যায় ইংরেজিতে।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী শহীদুল্লাহ সমকালকে বলেন, আমরা চাই সরকারি-বেসরকারি সব বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাই বাংলা পড়ূক, ইতিহাস পড়ূক-নিজেদের ভাষা, সংস্কৃতি, কৃষ্টি সম্পর্কে জানুক। তিনি বলেন, পঠন-পাঠনে মাতৃভাষার ব্যবহার বাড়লে তা শিক্ষার্থীদের ভালোভাবে বিষয়বস্তু আয়ত্ত করতে, বোধগম্য হতে ও শিখতে কাজে লাগবে।
ইউজিসি থেকে জানা গেছে, যে ১৮টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা পড়ানো হয় সেগুলোর মধ্যে রয়েছে-সেন্ট্রাল উইমেন্স, এশিয়ান, প্রিমিয়ার, গণ বিশ্ববিদ্যালয়, লিডিং, ইউডা, সাউথইস্ট, প্রাইম, নর্দান, শান্ত-মারিয়াম, উত্তরা, ইউল্যাব, সোনারগাঁও, নর্থবেঙ্গল, শেখ ফজিলাতুন নেছা, সিসিএন, নর্দান খুলনা এবং কুষ্টিয়ার রবীন্দ্রমৈত্রী ইউনিভার্সিটি। এ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সবগুলোতে অবশ্য বাংলায় অনার্স পড়ানো হয় না।
কোনো কোনোটিকে শুধু মাস্টার্স পড়ানো হয়। যদিও এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের সবগুলোতেই ইংরেজি বিভাগ চালু আছে।