অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহার হত্যাকাণ্ড মামলার রায়ের সংবাদটি শোনার পরপরই ‘জাস্টিস হারিড ইজ জাস্টিস বারিড; জাস্টিস ডিলেড ইজ জাস্টিস ডিনাইড’ এই প্রবাদটির কথা মনে পড়ে গেল। মামলা দায়েরের দেড় বছরের মাথায় রায় হয়ে যাওয়ার পর ভাবছিলাম তাড়াহুড়া হয়ে গেল না তো? বাংলাদেশে অন্যান্য হত্যা মামলার তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়া (বিচারিক আদালত পর্যন্ত) শেষ হতে যে সময়ক্ষেপণ হয় সে তুলনায় কিছুটা দ্রুত হয়েছে বলে মনে হয়েছে। আমাদের মতো বাঙালিদের ওই একটিই বদ স্বভাব!
সব বিষয় নিয়েই কোনো না কোনো খুঁত ধরা। আবার এ মামলার রায় কার্যকর হতে যদি দেরি হয় তাহলেও হয়তো আমরা সমালোচনামুখর হয়ে পড়ব। এর কারণও আছে। আসলে আমাদের দেশে দুর্নীতি, লুটপাট ও মারাত্মক অপরাধ করেও যেভাবে লোকজন পার পেয়ে যায়, তা দেখে মানুষের মনে এক ধরনের আস্থাহীনতার জন্ম নিয়েছে। অতীতে হত্যা মামলার ফাঁসির আসামি রাজনৈতিক পরিচয় ও ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কারণে যেভাবে রাষ্ট্রপতির বিশেষ মার্জনা পেয়ে দেশ পাড়ি দিয়েছে, তাতে মানুষের সন্দেহ দিন দিন আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। মেজর সিনহাকে হত্যার আগে এত কুকর্ম করেও বরখাস্তকৃত ওসি প্রদীপকে যেভাবে ‘ছাড়’ দেওয়া হয়েছে, তাতেও এই মামলা নিয়ে মানুষের মনে সন্দেহের দানা বেঁধেছিল। এসব ক্ষেত্রে অবশ্য ‘চুজ অ্যান্ড পিক’ সিস্টেম বেশ কার্যকর। মেজর সিনহা হত্যা মামলা চুজ অ্যান্ড পিক সিস্টেমের অন্যতম একটি উদাহরণ। এ কারণেই এই মামলার রায় প্রত্যাশিত সময়েই ঘোষিত হয়েছে বলে অনেকের ধারণা।